ধরুন আপনার বাড়ির পাশে ডাকাতি হচ্ছে অথবা দু'দল মানুষ মারামারি করছে অথবা রাস্তায় স্কুল কলেজে যাওয়ার পথে বখাটেরা ছাত্রীদের উত্যক্ত করে আপনি এসব দেখে পুলিশ স্টেশনে ফোন দিয়ে বললেন দয়া করে আসুন এখানে সমস্যা হচ্ছে। একবার, দু'বার কিংবা তিনবার আপনি ফোন করে কেবল ক্লান্তই হবেন পুলিশের সাহায্য পাওয়া আর আপনার হবে না। কিন্তু একবার যদি আপনি ফোন করে বলেন এখানে জামায়াতের কয়েকজন লোক বসে চা খাচ্ছে। আপনার ফোন রাখতে দেরী হবে, পুলিশের আসতে দেরী হবে না।
এবার আপনি বুঝতেই পারেন, জামায়াতের কর্মীরা কী পরিমাণ ভয়ংকর! আর তাদের আমীর যে ড্রাকুলা কিংবা রক্তখেকো জঘন্য হবে তা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশে যে অপরাধই হোক না কেন তা করবে ওই জামায়াতের আমীর বা কর্মীরাই। এরা ছাড়া বাংলাদেশে আর অন্যায়কারী কেউ নেই। একাত্তরে রাজাকারদের শাস্তি দেয়া হবে। ভালো কথা। রাজাকারের তালিকা তালিকার জায়গায় পড়ে আছে। তাদের বিনিময়ে একের পর এক খুন করা হলো জামায়াতের নেতাদের। দেশে প্রায় সাইত্রিশ হাজার রাজাকার ইউনিট কমান্ডার ছিলেন, তাদের প্রত্যেকের অধীনে আরো চার পাঁচ জন করে রাজাকার সদস্য ছিল। সমস্ত রাজাকারের দায় নিয়ে খুন হয়েছেন বা শাস্তি পাচ্ছেন রাজাকারের তালিকায় যারা ছিলেন না এমন আট দশজন মানুষ। কারণ তারা জামায়াত করেন।
আর যে পালের গোদা মানে যিনি ছিলেন রাজাকার প্রধান সে ডি আই জি আবদুর রহীমকে পুরস্কিত করেছেন স্বয়ং শেখ মুজিব। শেখ মুজিব স্বাধীনতা যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রধান ও পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র সচিব করেছিলেন। এরকম কোন রাজাকার কমান্ডারেরই বিচার হয়নি। বিচার হয়নি এমন মানুষের যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহন করেছেন স্বাধীনতার বিপক্ষেই এমন সেনা সদস্যদের। তারাও পুরস্কিত হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে।
টিক্কা খানের কথা আপনারা শুনে থাকবেন। বার বার উচ্চারিত হয় এই সেনা অফিসারের নাম। তার সাথে গোলাম আযম একটা মিটিং করেছেন কিভাবে দেশে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায় সেজন্য। এই অপরাধে গোলাম আযম যুদ্ধাপরাধী। অথচ তার পি এস, তার সকল কর্মকান্ডের সাক্ষী এবং অনেক কর্মকান্ডের উদ্যোক্তা, যোগানদাতা সেই নুরুল ইসলাম অনু যিনি এখন স্বাধীনতার স্বপক্ষের বড় নেতা। তিনি কোন শাস্তি পাওয়াতো দূরস্থান বরং শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট হয়ে তাকে তার পি এস বানিয়ে নেন। এখন তিনি ব্যংক এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আওয়ামীলীগ নেতা। তিনি এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক।
এভাবে বহু মানুষ স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলেন, স্বাধীনতাপন্থীদের অত্যাচার নির্যাতন করেছেন কিন্তু তারা সবাই এখন খুব নির্দোষ, নিষ্পাপ, মাসুম বাচ্চা। বলা হয় একাত্তরে খুন হয়েছে তিরিশ লাখ। এত সব খুনের সব দায় একা জামায়াত নেতাদের। তারা সব মানুষকে টিপে টিপে হত্যা করেছে! একাত্তরে যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন তাদের সাথে পরিচিত হোন ১ম পর্ব ও ২য় পর্ব।
এবার আসি জামায়াতের সদ্য নির্বাচিত আমীর মকবুল আহমাদ প্রসঙ্গে। প্রথমবারের মতো দলের শীর্ষ নেতৃত্বে একাত্তরে সংঘটিত ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে মুক্ত হলো’ এমন আলোচনা এবং সংবাদ পরিবেশন হওয়ার মধ্যেই হঠাৎ ‘হত্যার নির্দেশদাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত হলেন জামায়াতে ইসলামীর নতুন আমির মকবুল আহমাদ। পাশাপাশি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার কমান্ডার ছিলেন বলে অভিযোগ এনেছেন ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন মকবুল আহমাদ রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। তারই নির্দেশে ফেনীর স্থানীয় রাজাকার, আলবদর বাহিনীর সদস্যরা ফেনী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ওয়াজ উদ্দিনকে চট্টগ্রামে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।’
ঢাকা টাইমস নামক একটি সংবাদ মাধ্যম থেকেই উদাহরণ দেই তারা ১৭ অক্টোবর রিপোর্ট করেছে, স্বাধীন বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী যাদেরকে তাদের নেতা বানিয়েছে তাদের মধ্যে মকবুল আহমাদই প্রথম নেতা যার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা বা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নেই। তবে জামায়াত একান্ত বাধ্য হয়েই তাকে নেতা নির্বাচিত করেছে। কারণ দলটির যারা আলোচিত নেতা ছিলেন ইতোমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে তাদের পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন একজন। ফাঁসির রায়ের পর দুইজনের শুনানি অপেক্ষায় আছে আপিল বিভাগে। এই অবস্থায় মকবুল আহমাদই সবচেয়ে ‘জ্যেষ্ঠ’ জামায়াত নেতা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আব্দুল হান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘জামায়াত নেতা মকবুল আহমাদের বিষয়ে আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি। যেহেতু অভিযোগ পাইনি সুতরাং তদন্তের প্রশ্নই উঠে না।
আবার সেই পত্রিকাই ১৪ নভেম্বর ২০১৬ রিপোর্ট করেছে জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের কিছু তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান। সোমবার ধানমন্ডিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে মৌলভীবাজারের তিন জনের বিরু্দ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। হান্নান খান বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মকবুল আহমাদর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত সংস্থা। তদন্তে অগ্রগতিও হয়েছে। কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষ আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করার বিষয়টি জানানো হবে।
জনাব মকবুল আহমাদ প্রায় ছয় বছর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আমীরের দায়িত্ব পালন শেষে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমীর নির্বাচিত হয়ে দলের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছেন এবং শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত তার ভাষণ দেশে-বিদেশে জামায়াতের নেতাকর্মীদের যেমন উজ্জীবিত করেছে তেমনি আলেম-ওলামা এবং সহযোগী রাজনীতিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও এর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এটি সহ্য করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কাজেই জনাব মকবুলকে ঠেকানো নয়, জামায়াতকে ঠেকানো তারা জীবনের লক্ষ্য বানিয়ে নিয়েছে। এখন তারা তাকে রাজাকার বানাচ্ছেন এবং কোনো প্রকার সাক্ষী সাবুদ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বা পরিবারসমূহের অভিযোগের ভিত্তিতেও নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মিথ্যা ও বানোয়াট কল্পকাহিনীর ভিত্তিতে তাকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চলছে।
আইসিটির একজন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে বলেছেন যে, রাজাকারদের তালিকায় নাকি তার নাম পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী বিষয়টিকে হাস্যস্পদ বলে অভিহিত করেছেন। জনাব মকবুল আহমাদের পিতা একজন অবস্থাসম্পন্ন দানশীল ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন। মাসিক নব্বই টাকা বেতনের জন্য তিনি অথবা তার ভাই রাজাকারের চাকরি গ্রহণ করেছিলেন এটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। তার বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে তার গ্রাম বা ইউনিয়ন অথবা পার্শ্ববর্তী গ্রামের কোনোও লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন নজির নেই। সৎ জীবন-যাপনের অংশ হিসেবে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে শিক্ষকতার জীবন বেছে নিয়েছিলেন।
তার বিরুদ্ধে খুশিপুর গ্রামের আহসান উল্লাহকে হত্যার নির্দেশ দানের যে অভিযোগের কথা বলা হয়েছে তাও মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আহসান উল্লাহর স্ত্রী সালেহা বেগম এবং তার ভাই মুজিবল হক এই অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, আহসান উল্লাহ তার সাত মাস বয়সী ছেলের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে দেখার জন্য বাড়ি এসেছিলেন এবং পরে তিনি বাড়ি থেকে ছিলনিয়া বাজারে যান এবং সেখান থেকে ফেরত আসেননি। ধরে নেয়া হয়েছে যে তিনি মারা গেছেন; কিন্তু তার লাশ কোথাও পাওয়া যায়নি। এর সাথে জনাব মকবুল আহমাদের কোনো সংশ্লিষ্ট ছিল না।
একইভাবে লালপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ার আগুন দেয়া এবং ১১ ব্যক্তিকে হত্যা করার যে অভিযোগ এখন তার বিরুদ্ধে আনা হচ্ছে লালপুরের হিন্দু পাড়ার বাসিন্দারাও তাকে সর্বৈব মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলেছেন যে, জনাব মকবুল আহমাদ ও তার দল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করেছেন; বিপদে-আপদে সাহায্য করেছেন। তাদের পাড়ায় আগুন লাগানো অথবা হিন্দুদের হত্যা করার সাথে তার কোনো সংশ্রব নেই। তারা এও অভিযোগ করেছেন যে, জনাব মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য কিছু কিছু লোক ও দল তাদের বিভিন্নভাবে ভয় ও প্রলোভন দেখাচ্ছে, কিভাবে সাক্ষ্য দিতে হবে বাতলিয়ে দিচ্ছে। রাজনৈতিক ও আদর্শিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এটি একটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টা।
গত শনিবার দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘জামায়াত আমীর মকবুলের চিঠিতেই একাত্তরে হত্যার প্রমাণ’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টটিতে জামায়াতে ইসলামীর ফেনী মহকুমার প্যাড ব্যবহার করে মহকুমা আমীর হিসেবে জনাব মকবুল আহমাদ কর্তৃক রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রামে ভারপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসার জনাব ফজলুল হককে স্বহস্তে ইংরেজিতে একটি চিঠি লিখেছেন বলে দেখানো হয়েছে। চিঠিটি রহস্যজনক। চিঠিতে ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ)-এর নেতা মাওলানা ওয়াজ উদ্দিনের চট্টগ্রাম যাবার তথ্য দিয়েতাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সহায়ক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তার গতিবিধি চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ... ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখানে অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।
এক. ১৯৭১ সালে ফেনী মহকুমা জামায়াতের কোনো আমীর ছিলেন না, এই পদও ছিল না। তখন পদটির নাম ছিল নাজেম এবং জনাব মকবুল আহমাদ নাজেম পদেও ছিলেন না, অন্য এক স্থানীয় ব্যক্তি নাজেম ছিলেন।
দুই. প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের কিছু কালচার বা সংস্কৃতি থাকে এবং তা শুরু থেকেই গড়ে উঠে। জামায়াতে ইসলামীর কালচার হচ্ছে সরকারি, বেসরকারি অথবা আধা-সরকারি, যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক পত্রই হোক না কেন ‘আসসালামু আলাইকুম’ দিয়ে তা শুরু করা হয়। এক্ষেত্রে তা নেই।
তিন. রেডিও পাকিস্তান, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসারকে তিনি পত্র লিখতে যাবেন কেন? চট্টগ্রামে কি তার সংগঠনের দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তি ছিলেন না?’ আরো কথা আছে ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে রেডিও পাকিস্তানের কোনো আঞ্চলিক দফতর ছিল না। চট্টগ্রাম পোতাশ্রয়ে নোঙ্গর করা জাপানী একটি জাহাজের ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে প্রথমত এবং পরে কোলকাতা থেকে আরো যন্ত্রপাতি এনে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং প্রাথমিক অবস্থায় মেজর জিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। ব্যাপক গোলাগুলির কারণে মে মাসের ২৫ তারিখে বেতার কেন্দ্রটি কোলকাতায় স্থানান্তরিত হয় এবং যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা সেখানেই থাকে। কাজেই আগস্ট মাসে ফজলুল হকের রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসার হিসেবে থাকার প্রশ্নটি অবান্তর।
চার. তথাকথিত চিঠিটির হাতের লেখার সাথে আমীরে জামায়াত জনাব মকবুল আহমাদের হাতের লেখা, বাক্য গঠনপ্রণালী এবং নামের বানান কোনোটারই মিল নেই।
ফেনীর মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার মীর আব্দুল হান্নান ফেনীর বাসিন্দা। মকবুল সাহেবও ফেনীর বাসিন্দা। অথচ হান্নান সাহেব এতদিন জানতেন না মকবুল আহমাদ নামে এতবড় একজন একাত্তরের খুনী আছেন। বিগত ছয়টি বছর মকবুল সাহেব ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন, তার নাম বহুবার পত্র পত্রিকায় নাম এসেছে তারপরও হান্নান সাহেব তাকে চিনতে পারে নাই। অথচ এই মকবুল সাহেবের বিরুদ্ধেই সে অসীম সাহসীকতার সাথে যুদ্ধ করেছে ফেনীতে। বিগত চল্লিশ বছরে একবারের জন্যও তার মনে পড়ে নাই মকবুল সাহেবের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা। কোন মামলা বা কোথাও সে অভিযোগ করেনি। বক্তব্য বিবৃতিও দেয়নি। হঠাৎ করে তিনি যখন জামায়তের আমীর হলেন তখন সহসা তার সব বাঁধ খুলে যায়। চল্লিশ পয়তাল্লিশ বছর আগের স্মৃতি মনে পড়ে যায় হড় হড় করে। অবলীয়ায় বলতে লাগলেন মকবুল আহমাদের নৃশংস সব হত্যাযজ্ঞের কথা!
ঘটনা যখন এরকম তখন আমরা যারা আম পাবলিক আছি তাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না, জামায়াতের আমীর, এটিই একটি লোমহর্ষক অপরাধের নাম। এখানে মকবুল আহমাদ বলে কিছু নেই! আজকে আমাকে কিংবা আপনাকে যদি জামায়াতের আমীর বানিয়ে দেয়া হয় তাহলে দেখবেন কালই আমি কিংবা আপনি হয়ে পড়বেন এক অবমৃশ্যকারী শয়তান! শত শত মেয়ের ইজ্জত হরণকারী, বাংলা মায়ের বহু দামাল ছেলের হত্যাকারী।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি...
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন