২৮ অক্টো, ২০১৭

২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তান্ডবের শিকার যারা

আজ সেই রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার দিন। ২০০৬ সালের এই দিনে এ দেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলংকজনক অধ্যায় রচিত হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে তরতাজা ১৪ জন মানুষকে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে নারকীয় উল্লাস চালানো হয়েছিল। 

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সেদিন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। লগি, বৈঠা, লাঠি, পিস্তল ও বোমা হামলা চালিয়ে যেভাবে মানুষ খুন করা হয়েছে তা মনে হলে আজও শিউরে ওঠে সভ্য সমাজের মানুষ। সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ মেরে লাশের উপর নৃত্য উল্লাস করার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছে। জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে ওঠে প্রতিবাদের ঝড়। 

আটাশে অক্টোবরে সারাদেশে ১৪জন নিরীহ মানুষ শাহদাতবরণ করেছিলেন। সেই শহীদদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেয়া হল। 


শহীদ হাফেজ গোলাম কিবরিয়া শিপন (২১)
জন্ম- ১৯৮০ সালের ১৪ আগস্ট মৃত্যু- ২৮ অক্টোবর ২০০৬
শহীদ : ১২৭তম
পিতা : মো: তাজুল ইসলাম
মাতা : মোছা: মাহফুজা বেগম
স্থায়ী ঠিকানা : ১১৯/১/খ, পূর্ব বাসাবো,ঢাকা-১২১৪
ভাইবোন : তিন ভাই ও এক বোন

শিক্ষাজীবন : কুরআনে হাফেজ, শাহাদাতের সময় তিনি ঢাকা কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

সাংগঠনিক জীবন : সংগঠনের সাথী ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বায়তুলমাল সম্পাদক ছিলেন।
শাহাদাতের তারিখ ও স্থান : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে লগি বৈঠাধারীদের হামলায় আহত হয়ে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে শহীদ হন।

শহীদ গোলাম কিবরিয়া শিপন সদালাপি বিনয়ী ছাত্র হিসেবে এলাকায় সমধিক পরিচিত ছিলেন। শিপন ছিলেন কুরআনে হাফেজ, দাখিল পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন, পাশাপাশি IELTS পরীক্ষা দিয়ে ৫.৫ স্কোর করেছিলেন উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে। কিন্তু লগি বৈঠাধারী হায়েনারা তার সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। 

তার মা জানান, শিপন ২৭ অক্টোবর রাতে বাইরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেয়া হয়নি। তাই পরদিন সকালে শহীদ সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম (যিনি একই ঘটনায় শাহাদাতবরণ করেন) এসে ডাক দিলে সে আর বিলম্ব না করে বলে, আম্মা আমাকে রাতে যেতে দেন নাই কিন্তু আজ আর আমাকে নিষেধ করতে পারবেন না। এরপর সে হালকা একটু সেমাই খেয়ে ঘর হতে বের হয়ে যান। চলে আসেন পল্টন এলাকায়।


শহীদ মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম (২২)
জন্ম- ১৯৮৫ সালের ২৬ নভেম্বর, মৃত্যু- ২৮ অক্টোবর ২০০৬
শহীদ শিবির তালিকা -১২৬ তম
পিতাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন
মাতা: মাহমুদা দেলোয়ার মুন্নি

স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রামঃ কুলশ্রী,ডাকঘরঃ দরগাবাজার,উপজেলাঃ চাটখিল,জেলাঃ নোয়াখালী
ভাই-বোনঃ দুই ভাই এক বোন, মুজাহিদ সবার বড়।

শিক্ষাজীবনঃ শাহাদাতের সময় তিনি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
সাংগঠনিক জীবনঃ সংগঠনের সদস্য ও মিরপুর ১০ নং ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন।

শহীদ মুজাহিদের পুরো নাম মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম ফাহিম। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন এলাকায় লগি বৈঠা বাহিনী একের পর এক পিটিয়ে হত্যা করে তাকে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা মুজাহিদকে লগি বৈঠা দিয়ে আঘাত করতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ রাজপথে তার লাশ পড়ে ছিল পরে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে শহীদ হন।



শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম (১৬)
শাহদাত- ২ নভেম্বর ২০০৬
শহীদ : ১৩১তম
পিতা : মাহতাব উদ্দিন আহমদ
মাতা : শামছুন নাহার রুবি
স্থায়ী ঠিকানা : ১৩০/১৬, বাগানবাড়ি, মাদারটেক, বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা।
ভাইবোন : দুই ভাই ও তিন বোন

শিক্ষাজীবন : শাহাদাতের সময় তিনি সরকারি তিতুমীর কলেজে ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
সাংগঠনিক জীবন : সংগঠনের সাথী ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ সভাপতি ছিলেন।
শাহাদাতের তারিখ ও স্থান : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে ১৪ দলের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ নভেম্বর ২০০৬ ভোর ৪টায় ইবনে সিনা হাসপাতালে শহীদ হন।

ভয়াল আটাশের সকালে শহীদ মাসুম ও শহীদ শিপন একসাথে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু তারা আর জীবিত ফিরে আসেনি, এসেছে লাশ হয়ে। তারা বাসা থেকে বের হয়ে সরাসরি চলে আসে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে। সেখানেই লগি বৈঠা বাহিনীর ইটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম। ৫ দিন সংজ্ঞাহীন থাকার পর ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর ভোর ৪টায় মহান আল্লাহর শাশ্বত আহ্বানে সাড়া দিয়ে শাহাদাতবরণ করেন সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম। জীবন্ত মাসুমের চেহারা আর মৃত মাসুমের চেহারার মাঝে তফাত ছিল অনেক। তার সুন্দর, নিষ্পাপ চেহারাটি যেন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছিল। শহীদ মাসুমকে কেউ কোনদিন রাগ কিংবা ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখেনি।



শহীদ রফিকুল ইসলাম (১৫)
মৃত্যু- ২৮ অক্টোবর ২০০৬
শহীদ : ১২৮তম
পিতা : মো: আমির হোসেন
মাতা : মোছা: রোকেয়া খাতুন
স্থায়ী ঠিকানা : চরযাত্রাপুর, যাত্রাপুর, কুড়িগ্রাম
ভাইবোন : ২ ভাই ও ২ বোন

শিক্ষাজীবন : শাহাদাতের সময় তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

সাংগঠনিক জীবন : সংগঠনের সাথী ও যোগদাহ ইউনিয়ন সেক্রেটারি ছিলেন।
শাহাদাতের তারিখ ও স্থান : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠার পৈশাচিক আঘাতে আহত হয়ে বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শহীদ হন।


শহীদ আব্দুল্লাহ আল ফয়সল (২৪)
মৃত্যু- ২৯ অক্টোবর ২০০৬
শহীদ : ১২৯তম
পিতা মো: আহসানুল হাই
মাতা : সাইয়্যেদা হাসনা বানু
স্থায়ী ঠিকানা : পাইনাদী, মোস্তফানগর, সানারপাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ
ভাইবোন : ৫ ভাই ও ২ বোন

শিক্ষাজীবন : শাহাদাতের সময় তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পাশাপাশি স্থানীয় হাজী শামসুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন।

সাংগঠনিক জীবন : সংগঠনের কর্মী ও অধ্যয়নরত বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

শাহাদাতের তারিখ ও স্থান : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সিদ্ধিরগঞ্জ চিটাগাং রোডে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় মারাত্মক আহত হয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে শহীদ হন।

শহীদ আবদুল্লাহ আল ফয়সাল হত্যাকারীদের বিচার তো হয়ই নি, উল্টো বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক মামলা বলে মামলাটিই প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডে ছাত্রশিবিরের মিছিলে হামলা চালায় লগি বৈঠা বাহিনী। উল্লাসের সাথে লগি বৈঠা সন্ত্রাসীরা আগাত করতে থাকে নেতাকর্মীদের উপর। এ সময় শহীদ আবদুল্লাহ আল ফয়সালের বড় ভাই ফাহাদ বিন আহসানকে ঘিরে ফেলে সন্ত্রাসীরা। কাছেই ছিল ফয়সাল। ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে যান তিনি। লগি বৈঠার আঘাত এসে পড়তে থাকে তার উপর। এক পর্যায় মাথায় আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটয়ে পড়েন তিনি। দুই ভাই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। পরদিন রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পরপারে পাড়ি জমান ফয়সাল।


শহীদ মোঃ শাহজাহান আলী 
পিতাঃ মৌলভী সিরাজুল ইসলাম 
৬ ভাই ২ বোন 
বয়স ২৫ 
সাংগঠনিক মানঃ শিবিরের সদস্য, নাঙ্গলকোট থানা দক্ষিণ সভাপতি।
গ্রামঃ উত্তর দুর্গাপুর, পোঃ দুর্গাপুর বাজার, উপজেলাঃ নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা 
৩১ অক্টোবর নাঙ্গলকোট কলেজ মাঠের সন্নিকটে সন্ত্রাসীদের হামলায় শাহদাতবরণ করেন।  



শহীদ জসিম উদ্দিন
জন্ম- ১৯৮৬ সালের এপ্রিল ,মৃত্যু- ২৮ অক্টোবর ২০০৬
ঠিকানা; লালবাগের মিটফোর্ড রোডে বাসা।
সাংগঠনিক জীবন : জামায়াতে ইসলামীর কর্মী ও ৬৬ নং ওয়ার্ডের মিটফোর্ড ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। 

২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা বাহিনীর নির্মম শিকার লালবাগের শহীদ জসিম উদ্দিন। সেদিন লগি-বৈঠাধারী সন্ত্রাসীরা তাকে শুধু সাপের মতো পিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, লাশের ওপর উঠে পৈশাচিক নৃত্য উল্লাস করেছে, করেছে আনন্দ উল্লাস। কী অপরাধ ছিল জসিমের? কেন তাকে মরতে হলো? এ প্রশ্নের জবাব আজো খুঁজে পায়নি তার বাবা-মা।

২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা বাহিনীর তান্ডবে যারা প্রাণ হারান তাদের মধ্যে জসিম উদ্দিন শাহাদাতবরণ করেন নির্মমভাবে। বিভিন্ন ভিডিওফুটেজ থেকে দেখা যায়, লগি-বৈঠা বাহিনী জামায়াত কর্মী জসিম উদ্দিনকে দীর্ঘক্ষণ ধরে পিটায়। মাঝে-মাঝে সে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করে। আবার টেনে ধরা হয়। পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে তার শরীরের জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়। লগি-বৈঠা দিয়ে তাকে পিটানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশের ওপর উঠে নৃত্য করতে থাকে নরপিশাচরা।


শহীদ আরাফাত হোসেন সবুজ
পিতাঃ ওয়ালিয়ার রহমান 
মাতাঃ সালেহা খাতুন (জামায়াতের রুকন)
ভাই-বোনঃ ২ ভাই ২ বোন 
বয়সঃ ২৩ 
সাংগঠনিক মানঃ জামায়াত কর্মী 
ঠিকানাঃ গ্রাম-দরি, পোঃ- পলিতা, সদর, মাগুরা 
২৮ অক্টোবর ২০০৬ বেলা ১১ টায় আওয়ামীলীগের হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহদাত বরন করেন।


শহীদ আব্বাস আলী 
পিতাঃ জহুরুল হক
পেশাঃ ব্যবসা 
বয়সঃ ২৬ 
সাংগঠনিক মানঃ জামায়াত কর্মী। 
ঠিকানাঃ গ্রাম- হিজুলি, পোঃ আমঝুপি, সদর, মেহেরপুর। 
মেহেরপুর শহরে আওয়ামী লীগের গুলিতে বিকেল পাঁচটায় শাহদাতবরণ করেন।


শহীদ জাবিদ আলী 
পিতাঃ হোসেন আলী 
স্ত্রীঃ আম্বিয়া খাতুন 
ছেলেঃ ৩ মেয়েঃ ৩ 
পেশাঃ ব্যবসা 
বয়সঃ ৫৫
সাংগঠনিক মানঃ জামায়াতের রুকন, খাজুরা ইউনিয়ন সভাপতি। 
ঠিকানাঃ গ্রাম- কাপসন্ধা, ইউনিয়ন- খাজুরা, উপজেলা- আশাশুনি, সাতক্ষীরা 
আটাশে অক্টোবর সন্ধ্যায় সমাবেশ থেকে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের হামলায় শাহদাত বরণ করেন।


শহীদ সাবের হোসেন 
পিতাঃ আতিয়ার রহমান
স্ত্রীঃ ফেন্সী বেগম 
ছেলেঃ ৩ মেয়েঃ ১ 
বয়সঃ ৩২ 
সাংগঠনিক মানঃ জামায়াত কর্মী 
ঠিকানাঃ গ্রাম- পূর্ববালা, পোঃ বালাগ্রাম, উপজেলা- জলঢাকা, জেলাঃ নীলফামারী 
তিরিশ অক্টোবর ২০০৬ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সন্ধ্যায় শাহদাতবরণ করেন।    



শহীদ রুহুল আমিন 
পিতাঃ আবু জাফর
স্ত্রীঃ সুলতানা রাজিয়া 
ছেলেঃ ২ মেয়েঃ ৩ 
বয়স ৪৫ 
সাংগঠনিক মানঃ রুকন, জেলা অফিস সম্পাদক 
ঠিকানাঃ গ্রাম- লক্ষ্মীপুর, ডাকঘর- জয়দেবপুর, সদর, গাজীপুর। 
এশার নামাজ আদায় করে ফেরার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় শাহদাতবরণ করেন।  



শহীদ জসিম উদ্দিন।
জন্ম-১৯৭২ মৃত্যু- ২৮ অক্টোবর ২০০৬ 
শিক্ষা: ১৯৯৩ সালে তিনি স্নাত্বক সম্পন্ন করেন।
ঠিকানা: শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৭২ সালে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সুদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস।
শহীদ জসিম উদ্দিন ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন।

শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৯৬ সালে সিঙ্গাপুর যান। সেখানে তিনি ২ বছর অবস্থান করেন। ২০০১ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০২ সালে সৌদি আরব ও ২০০৫ সালে পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। পিতার মৃত্যুর সংবাদ শুনে ২০০৬ সালের মার্চে তিনি দেশে আসেন। ১২ নবেম্বর পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। লগিবৈঠা বাহিনীর বুলেটের আঘাতে লাশ হতে হলো শহীদ জসিম উদ্দিনকে।


শহীদ হাবিবুর রহমান (৪০)
জন্ম- মৃত্যু- ২৮ অক্টোবর ২০০৬
পিতা: আবদুল মুকিম মৃধা
মাতা: সাহেরা বেগম
ঠিকানা: গ্রামের বাড়ী মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলায় মৃধা কান্দি গ্রামে।পরবর্তীতে জীবিকার সন্ধানে চলে আসেন ঢাকায়।
এসবের মাঝেও বেশি সময় ব্যস্ত থাকতেন মানুষকে কুরআন ও হাদীসের কথা বলার জন্য। 

শিক্ষা: মাত্র ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া হাবিবুর রহমান আয়ত্ত করেছিলেন কুরআন হাদীসের অনেক বিষয়। 

প্রথমে তারা হাবিবুর রহমানকে গুলী করে। তারপর লগিবৈঠা দিয়ে উল্লাসের সাথে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর তার লাশ দীর্ঘক্ষণ রাস্তার উপরে পড়ে থাকে। পরে তারা লাশটি গুম করার উদ্দেশ্যে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ উদ্ধার করে লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও চলে লাশ ছিনিয়ে নেয়ার নানা চেষ্টা। তার নাম মনির হোসেন এবং দলীয় কর্মী দাবি করে আওয়ামী লীগ।

স্ত্রী আছিয়া বেগম স্বামীকে হারিয়ে ১ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছে ।এখন কান্নাই তার এখন একমাত্র সঙ্গী।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন