আমরা ওনার একটা পরিচয় ভুলেই গেছি। আব্দুল লতিফ নেজামী গতকাল ইন্তেকাল করেছেন। ওনার যে পরিচয়টা উচ্চারিত হচ্ছে না তা হলো তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি। নেজামে ইসলাম পার্টির রয়েছে দীর্ঘ ও গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস। এদেশের ইসলামপন্থীদের একটি বড় ছাতা ছিলো নেজামে ইসলাম।
বৃটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের পর বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের এক পর্যায়ে উপমহাদেশের উলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখদের সংগঠন হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২০সালে । কিন্তু উলামায়ে হিন্দ অবিভক্ত ভারতে বিশ্বাসী ছিল এবং কংগ্রেসকে সমর্থন দেয়। তাই মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর পরামর্শে উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্যে পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্যে ১৯৪৫ সালে কলকাতা মোহাম্মদ আলী পার্কে অনুষ্ঠিত উপমহাদেশের উলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখদের এক সমাবেশে আল্লামা শিব্বির আহমদ উসমানীর নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম গঠিত হয়। এই জমিয়ত উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্যে পৃথক আবাসভুমি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মুসলিম লীগকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করে।
১৯৪৫ সালের ২৮ ও ২৯ অক্টোবর কলকাতার মুহাম্মদ আলী পার্কে মুসলিম লীগের প্রত্যক্ষ সমর্থনে একটি উলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলন থেকে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘নিখিল ভারত জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম’ নামে একটি নতুন সংগঠন। এই নতুন জমিয়ত পাকিস্তান প্রশ্নে মুসলিম লীগের পক্ষ নেয়। ব্রিটিশ শাসনামলে পাকিস্তান গঠনের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। পাকিস্তানে যোগ দেয়ার প্রশ্নে অনুষ্ঠিত সিলেট গণভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তারা। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এই ভূমিকার জন্য ভোটের ফলে আসাম থেকে সিলেট বিচ্ছিন্ন হয়ে পূর্ব পাকিস্তানে যোগ দেয়।
দেশভাগের পর মুসলীম লীগ নেতৃবৃন্দের ইসলামী রাষ্ট্র করার ওয়াদা ভঙ্গের ফলে নবগঠিত পাকিস্তানে ‘নেজামে ইসলাম’ তথা ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়া সুদূর পরাহত দেখে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ নিরাশ হয়ে পড়েন। এক প্রকার প্রতারিত হয়েই ১৯৫২ সালে নিখিল ভারত জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ মুসলিম লীগের সঙ্গ ত্যাগ করে ‘নেজামে ইসলাম পাটি’ নামে পৃথক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এসময়ে মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী’র (রহ.) জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পাকিস্তানের অনুসারী আলেমরাও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে সম্পৃক্ত হন।
নেজামে ইসলামের প্রচেষ্টায় ‘১৯৫২ সালের ১৮, ১৯ ও ২০ মার্চ বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার হযরত নগরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অধিবেশনেই মাওলানা আতহার আলী (রহ.) কে সভাপতি, চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ ইসহাক (রহ.) কে সহ সভাপতি, মাওলানা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক এবং মাওলানা আশরাফ আলী ধর্মন্ডলীকে সহকারী সম্পাদক নির্বাচিত করে ‘নেজামে ইসলাম পার্টি’র কার্যক্রম শুরু হয়। যে কোন মূল্যে পাকিস্তানে নেজামে ইসলাম তথা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে এই পার্টির প্রধান লক্ষ্য হিসেবে স্থির করা হয়।
মুসলিম লীগের তুলনায় এই দলের নেতৃত্বে বিজ্ঞ ও শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম থাকায় অল্প দিনেই নেজামে ইসলাম পার্টি একটি শক্তিশালী বৃহৎ দলে পরিণত হয়। পূর্ব পাকিস্তানে নেজামে ইসলামের রাজনীতির প্রভাব বেশি বিস্তার লাভ করে। মুসলিম লীগের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে ভাসানী আওয়ামী মুসলিম লীগের, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক কৃষক শ্রমিক পার্টি গড়ে তুলেন। এগুলোও পূর্ব পাকিস্তানে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এমন সময়েই ১৯৫৪ সালের জাতীয় নির্বাচন চলে আসে। মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে তখনই প্রথম রাজনৈতিক জোটের জন্ম হয় যুক্তফ্রন্ট নামে।
১৯৫৪ সালে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল নেজামে ইসলাম পার্টি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়। এই নির্বাচনে তাদের এককালের পৃষ্ঠপোষক ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগকে পরাজিত করার লক্ষ্যে অপরাপর বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচন করা হয়। এই ফ্রন্টে নেজামে ইসলাম পার্টি সাথে ঐক্য করে ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ, কৃষক লীগ ও কৃষক শ্রমিক পার্টি। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগের দলীয় প্রতিক ‘নৌকা’। যা বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিচয়চিহ্নে পরিণত হয়েছে। ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ২১-দফা দাবি সম্বলিত একটি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হয়। এর ভূমিকায় বলা হয় : ‘কুরআন ও সুন্নাহ-বিরোধী কোন আইন প্রণয়ন করা হবে না।’
যুক্তফ্রন্টের নমিনেশন নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। যখন যুক্তফ্রন্টের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছিল তখন নেজামে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আতহার আলী রহ. এর প্রস্তাব ছিল যুক্তফ্রন্ট থেকে কোন কমিউনিস্ট ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। মাওলানা আতাহার আলী রহ. ১২ জনের তালিকা দিয়ে বলেলেন এরা বর্ণচোরা কমিউনিস্ট, এদের মনোনয়ন দেয়া যাবে না। আবার এই বারোজন রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। বলাই বাহুল্য নেজামে ইসলাম পার্টির অভিযোগ মিথ্যা ছিলো না। তাঁরা সকলেই গোপনে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন এবং এটা শহীদ সোহরাওয়ার্দীও খুব ভালোভাবেই জানতেন।
সোহরাওয়ার্দী এগিয়ে এলেন উদ্ধার করতে, তিনি বললেন, আমি বিলেতে কমিউনিস্ট দেখেছি, আমি কমিউনিস্ট চিনি, কমিউনিজম বুঝি। ‘এ মুসলিম ক্যান নেভার বি এ কমিউনিস্ট, এট মোস্ট দে ক্যান বি কল্ড লালমিয়া। যাই হোক শেষ পর্যন্ত মাওলানা আতাহার আলীর তালিকা ১২ থেকে কমে মাত্র একজনে এল। তিনি হাজি দানেশকে কিছুতেই নমিনেশন দেবেন না।
সোহরাওয়ার্দী আর আতাহার আলী নমিনেশন বোর্ডে বসেছেন। হাজী দানেশ ঢুকবেন। আগেই সোহরাওয়ার্দী তার শিষ্য শেখ মুজিবকে বলে দিয়েছেন হাজী দানেশকে যেন ভালো করে ব্রিফ করে দেয়া হয়। হাজী দানেশ ঢুকলেন রুমে, টুপি দাঁড়ি নিয়ে, ঢুকেই লম্বা করে বলে উঠলেন, “আচ্ছালামু আলাইকুম”।
সোহরাওয়ার্দি বলে উঠলেন, দেখেন মাওলানা সাহেব, কমিউনিস্টদের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি থাকে? ওরা কখনো, “আচ্ছালামু আলাইকুম” বলে? ওরা বলে “লাল সালাম”। মাওলানা আতাহার সাহেব মাথা নাড়েন, তিনি বলেন, না স্যার, আপনি জানেন না, সে পাক্কা কমিউনিস্ট আমার কাছে খবর আছে। সোহরাওয়ার্দী বলেন, আরে দেখেন তাঁর দাঁড়ি আছে টুপি আছে। মাওলানা সাহেব ছাড়বেন কেন? তিনিও বলেন, মার্ক্স-লেনিনেরও টুপি দাঁড়ি দুটাই ছিল স্যার, আপনি তো জানেন। এবার বিরস বদনে সোহরাওয়ার্দী প্রশ্ন করলেন। হাজী সাহেব, নমিনেশন দিলে পাশ করবেন তো? হাজী সাহেব ঘর কাপিয়ে উত্তর দিলেন, ইনশাল্লাহ স্যার পাশ করবো। এইবার সোহরাওয়ার্দী লাফিয়ে উঠলেন, এই দেখেন মাওলানা সাহেব, “একজন কমিউনিস্ট কখনো আল্লাহ বলতে পারে না। কমিউনিস্ট আল্লাহ বললে সে কমিউনিস্ট থাকে না। যান, হাজী সাহেব আপনাকে নমিনেশন দেয়া হলো”
প্রার্থী চুড়ান্ত করে শুরু হলে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের প্রচারণা। জনসভা গুলোতে নেমে এসেছিল সর্বস্তরের জনগণের ঢল। মুসলিম লীগের বিপর্যয় ঘটিয়ে যুক্তফ্রন্ট অল পাকিস্তানে সরকার গঠন করলো। যুক্তফ্রন্ট সরকারে নেজামে ইসলাম পার্টি অংশ নেয় এবং মন্ত্রীত্ব লাভের সুবাদে গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারনী ভূমিকা পালন করে। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে দলটির ৩৬ জন নেতা নির্বাচিত হন।
জাতীয় পরিষদে সংসদীয় দলের নেতা ছিলেন দলীয় সভাপতি মাওলানা আতহার আলী (রহ.)। এডভোকেট মৌলভী ফরিদ ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী। প্রাদেশিক পরিষদের স্পীকার ছিলেন আবদুল ওহাব খান। এছাড়া আইন, ভূমি ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ও ছিল নেজামে ইসলাম পার্টির মন্ত্রীদের দায়িত্বে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী মুহাম্মদ আলী পরবর্তীতে নেজামে ইসলাম পার্টিতে যোগ দিলে তাকে দলের সভাপতি নিযুক্ত করা হয়। যে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের স্বপ্ন নিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়ে লড়াই করেছিল ওলামা ও তৌহিদী জনতা সে মলিন স্বপ্নে নেজামে ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সরকারে থাকার কারণে প্রাণ লাভ করে।
আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের জন্যে গঠিত ৯-নেতার বিবৃতি থেকে শুরু করে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ), পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম),) ডেমোক্রেটিক এ্যাকশন কমিটি (ড্যাক), কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি (কপ) ও পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)গঠনে নেজামে ইসলাম পার্টি প্রধান ভূমিকা পালন করে।
১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় নেজামে ইসলাম অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়। যুদ্ধ বন্ধে গঠিত হওয়া সিভিল কমিটি 'শান্তি কমিটিতে' নেজামে ইসলামের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। কেন্দ্রীয় কমিটিসহ প্রতিটি জেলা কমিটিতে তাদের সদস্য সংখ্যা ছিলো মুসলিম লীগের কাছাকাছি। মুশরিক ও তাদের দালালদের কাছে পরাজিত হয় এদেশের ইসলামপন্থীরা।
এরপর শেখ মুজিবের শাসনামলে নেজামী ইসলাম অন্যান্য ইসলামী দলের মতো নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এই নিষিদ্ধ হওয়াটাই কাল হয় নেজামে ইসলামের জন্য। জামায়াতে ইসলাম নেজামে ইসলামের মতো উদার সংগঠন ছিলো না। এখানে কোন বড় আলেম যোগ দিলে ছোট পরিসর থেকে ধীরে ধীরে নেতা হতে হতো। কিন্তু নেজামে ইসলামে নতুন যোগ দেওয়া আলেমকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতো। এই প্রসঙ্গে শহীদ আমীরে জামায়াত মাওলানা নিজামী বলেন আমাদের কাছে অনেকে এই অভিযোগ করতো, বলতো আমরা এই সমস্যার কারণে জামায়াতে যোগ দিতে পারি না।
মাওলানা নিজামী বলেন, এটাই জামায়াতের শক্তি। এই ধীরে ধীরে লোক প্রস্তুত করার নীতি স্বয়ং রাসূলের। তাই এখানের লোকেরা সহজে মচকাবে না। কারণ একটি দীর্ঘ পক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এখানের নেতা তৈরি হয়। আর তাছাড়া এটা বড় আলেমদের অহংবোধকেও নষ্ট করে আল্লাহর জন্য কাজ করার প্রতি উৎসাহ যোগায়। জামায়াত এই সুবিধা পেয়েছে স্বৈরাচার মুজিবের শাসনামলে। ঐ সময় নেজামী ইসলামী তার সাংগঠনিক শক্তি হারিয়ে ফেললেও জামায়াত অপরিবর্তিত থাকে। ফলশ্রুতিতে জামায়াত এখন ইসলামপন্থীদের সবচেয়ে বড় মিলনমেলায় পরিণত হয়।
৭৫এ মুশরিকের দাস শেখ মুজিবের পতন হলে ইসলামী রাজনীতির দ্বার উন্মুক্ত হয় জিয়ার হাত ধরে। এরপর জামায়াতের তত্ত্বাবধানে নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা মাওলানা ছিদ্দিক আহমদের নেতৃত্বে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) গঠিত হয়, ইত্তেহাদুল উম্মাহ এবং এডভোকেট সৈয়দ মঞ্জুরুল আহসানের সহযোগিতায় ন্যাশনাল ফ্রণ্ট,ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। এ সবগুলোতে নেজামে ইসলামের অংশগ্রহণ ছিলো।
১৯৯১ সালে তৎকালীন ছয়টি ইসলামি দল নিয়ে গঠন করা হয় ইসলামী ঐক্যজোট। দলগুলো হচ্ছে- খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলামী পার্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন (বর্তমান ইসলামী আন্দোলন), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও ফরায়েজী আন্দোলন। জোট গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক, চরমোনাইর পীর মাওলানা ফজলুল করিম, মাওলানা আবদুল করিম শায়খে কৌড়িয়া, মাওলানা আশরাফ আলী ধর্মান্ডুলি, মাওলানা মুহিউদ্দিন খান ও মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ। আব্দুল লতিফ নেজামী এই ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ছিলেন। এটাই এখন ওনার বড় পরিচয় হিসেবে প্রকাশ পায়। যদিও সবগুলো দল এখন ঐক্যজোটে নেই।
নেজামে ইসলাম পূর্বের শক্তি হারিয়ে ফেললেও এরা ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকে বিচ্যুত হননি। তাদের সবচেয়ে বড় ও একক সাফল্য ছিলো মুশরিকদের সংগঠন কংগ্রেসের পক্ষে থাকা কওমী আলেমদের প্রচণ্ড বিরোধীতা সত্ত্বেও সিলেটকে আসাম থেকে কেটে পূর্ব-পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করা। এই বিশাল ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার হলেন আব্দুল লতিফ নেজামী। দল হিসেবে শক্তিশালী না হওয়ায় আওয়ামীলীগ তাঁকে হেনস্তা করেনি, ফাঁসী দেয়নি। তবে প্রচণ্ড চাপে রেখেছে। বৃদ্ধ বয়সে জেলে নিয়েছে কয়েকবার এবং আওয়ামী বিরোধী জোট থেকে লতিফ নেজামীকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা এই মরহুমকে জান্নাত দান করুন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন