আমাদের মহানবী তখনো নবুয়্যত পাননি। তাঁর বয়স আনুমানিক ৩২ সেই সময়ের ঘটনা। তখন পৃথিবীর বড় সাম্রাজ্য ছিল দুইটা। রোম সাম্রাজ্য ও পারস্য সাম্রাজ্য। রোমানরা ঈসা আ.-এর অনুসারী আর পারসিকরা ছিল অগ্নিপূজারক বা মুশরিক। রোমানরাও ঈসা আ.-এর নসিহতকে সঠিকভাবে মান্য করতো না বরং বিকৃত করে ঈসা আ.-কে আল্লাহর সাথে শরিক করতো। যাই হোক মুহাম্মদ সা. নবুয়্যত পাওয়ার প্রায় আট বছর আগে রোমের কায়সার মরিসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়। ফোকাস নামক এক ব্যক্তি রাজ সিংহাসন দখল করে।
ফোকাস ছিল মরিসের সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডার। সে কায়সার মরিসের চোখের সামনে তার পাঁচ পুত্রকে হত্যা করে। তারপর নিজে কায়সারকে হত্যা করে পিতা ও পুত্রদের কর্তিত মস্তকগুলো কনস্ট্যান্টিনোপলে (ইস্তাম্বুল) প্রকাশ্য রাজপথে টাঙিয়ে দেয়। এর কয়েকদিন পর সে কায়সারের স্ত্রী ও তাঁর তিন কন্যাকেও হত্যা করে। সে সময় কনস্ট্যান্টিনোপল ছিল রোমান সাম্রাজ্যের কেন্দ্র।
এ ঘটনার ফলে পারস্যের (ইরান) বাদশাহ খসরু পারভেজ রোম আক্রমণ করার নৈতিক ভিত্তি খুঁজে পান। কায়সার মরিস ছিলেন তার কূটনৈতিক বন্ধু। তার সহায়তায় পারভেজ ইরানের সিংহাসন দখল করেন। তাই খসরু মরিসকে নিজের পিতা বলতেন। এ কারণে তিনি ঘোষণা করেন, বিশ্বাসঘাতক ফোকাস আমার পিতৃতুল্য ব্যক্তি ও তার সন্তানদের প্রতি যে জুলুম করেছে আমি তার প্রতিশোধ নেবো। ফোকাস রোমের ক্ষমতা দখল ৬০২ সালে।
৬০৩ সালে খসরু রোম সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে এবং কয়েক বছরের মধ্যে ফোকাসের সেনাবাহিনীকে একের পর এক পরাজিত করে একদিকে এশিয়া মাইনরের এডেসার (বর্তমান উরফা) এবং অন্যদিকে সিরিয়ার হালব ও আন্তাকিয়ায় পৌঁছে যায়। রোমের রাজ উপদেষ্টা পরিষদ যখন দেখলো ফোকাস দেশ রক্ষা করতে পারছে না তখন তারা আফ্রিকার গভর্ণরের সাহায্য চাইলো। আফ্রিকা রোমানদের অন্তর্গত ছিল। গভর্ণর তার পুত্র হিরাক্লিয়াসকে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী সহকারে কনস্ট্যান্টিনোপলে পাঠান।
তারা সেখানে পৌঁছালে ফোকাস পদত্যাগ করেন। কারণ ততদিনে (প্রায় আট বছরে) নিশ্চিত হয় তার দ্বারা সাম্রাজ্য রক্ষা পাবে না, ফলে রাজধানীতে কেউ তাকে সাপোর্ট দিচ্ছিল না। আফ্রিকার গভর্নরের ছেলে হিরাক্লিয়াসকে কায়সার পদে অভিষিক্ত করা হয়। সে ক্ষমতাসীন হয়েই ফোকাসের সাথে একই ব্যবহার করেন যা সে ইতোপূর্বে মরিসের সাথে করেছিল। এটি ছিল ৬১০ খৃষ্টাব্দের ঘটনা এবং এ বছর নবী (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুয়্যত লাভ করেন।
খসরু পারভেজ যে অজুহাত ও নৈতিকতার ভিত্তিতে যুদ্ধ শুরু করেছিলো, ফোকাসের পদচ্যুতি ও তার হত্যার পর তার আর দরকার থাকে না। যদি সত্যিই বিশ্বাসঘাতক ফোকাসের থেকে তার জুলুমের প্রতিশোধ গ্রহণ করাই তার উদ্দেশ্যে থাকতো তাহলে তার নিহত হবার পর নতুন কায়সারের সাথে পারভেজের সন্ধি করে নেয়াই ছিল যুক্তিযুক্ত। কিন্তু খসুরুর মনে ছিল অন্য চিন্তা। সে এই সুযোগে রোমানদের নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করলো। খসরু এরপরও যুদ্ধ জারি রাখেন। শুধু তাই নয় খসরু এই যুদ্ধকে ধর্মীয় রূপ দেয়। ফলে যুদ্ধ অগ্নি উপাসক ও খৃষ্টবাদের মধ্যে ধর্মীয় যুদ্ধের রূপ নেয়।
খৃষ্টানদের যেসব সম্প্রদায়কে ধর্মচ্যুত ও নাস্তিক গণ্য করে রোমান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় গীর্জা বছরের পর বছর ধরে তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল (অর্থাৎ নাস্তুরী, ইয়াকূবী ইত্যাদি) তারাও আক্রমণকারী অগ্নি উপাসকদের প্রতি সর্বাত্মক সহানুভূতি দেখাতে থাকে। এদিকে ইহুদীরাও অগ্নি উপাসকদেরকে সমর্থন দেয়। এমন কি খসরু পারভেজের সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহণকারী ইহুদী সৈন্যদের সংখ্যা ২৬ হাজারে পৌঁছে যায়।
হিরাক্লিয়াস এসে রোমানদের বিরুদ্ধে এই বাঁধভাঙ্গা স্রোত রোধ করতে পারে নি। সিংহাসনে আরোহণের পরপরই পূর্বদেশ থেকে প্রথম যে খবরটি তার কাছে পৌঁছে সেটি ছিল পারসিকদের হাতে আন্তাকিয়ার পতন। তারপর ৬১৩ খৃষ্টাব্দে তারা দামেশক দখল করে। ৬১৪ খৃষ্টাব্দে বায়তুল মাকদিস দখল করে পারসিকরা সমগ্র খৃষ্টান জগতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ৯০ হাজার খৃস্টানকে এই শহরে হত্যা করা হয়। তাদের সবচেয়ে পবিত্র আল কিয়ামাহ গীর্জা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। আসল ক্রুশ দণ্ডটি, যে সম্পর্কে খৃস্টানদের বিশ্বাস হযরত ঈসা আ.-কে তাতেই শূলবিদ্ধ করা হয়েছিল, পারসিকরা তা নিয়ে নিল।
আর্চবিশপ জাকারিয়াকেও পাকড়াও করা হয় এবং শহরের সমস্ত বড় বড় গীর্জা তারা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। খসরু পারভেজ দখলের নেশায় যেভাবে পাগলপারা হয়ে গিয়েছিল তা বায়তুল মাকদিস থেকে হিরাক্লিয়াসকে সে যে পত্রটি লিখেছিল তা থেকে আন্দাজ করা যায়। তাতে সে উল্লেখ করে,
“সকল খোদার বড় খোদা, সমগ্র পৃথিবীর অধিকারী খসরুর পক্ষ থেকে তার নীচ ও মূর্খ অজ্ঞ বান্দা হিরাক্লিয়াসের নামে-
“তুমি বলে থাকো, তোমার খোদা আল্লাহর প্রতি তোমার আস্থা আছে। তোমার খোদা আমার হাত থেকে জেরুজালেম রক্ষা করলেন না কেন?”
এ বিজয়ের পর এক বছরের মধ্যে মুশরিক সেনাদল জর্ডান, ফিলিস্তিন ও সমগ্র সিনাই উপদ্বীপ দখল করে পারস্য সাম্রাজ্যের সীমানা মিসর পর্যন্ত বিস্তৃত করে। এটা এমন এক সময় ছিল যখন মক্কায় আল্লাহর রাসূল সা. ও তার অনুসারীদের ওপর নির্যাতন চলছে। নির্যাতনের অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, ৬১৫ খৃষ্টাব্দে অনেক মুসলমানকে স্বদেশ ত্যাগ করে হাবশার (ইথিওপিয়া) খৃস্টান রাজ্যে (রোম সাম্রাজ্যের মিত্র দেশ) আশ্রয় নিতে হয়।
রোম সাম্রাজ্যে পারস্যের বিজয় অভিযানের কথা ছিল সবার মুখে মুখে। মক্কার মুশরিকরা এসব কথায় আহলাদে আটখানা হয়ে উঠেছিল। তারা মুসলমানদের বলতো, দেখো, ইরানের অগ্নি উপাসকরা বিজয় লাভ করেছে। ওহী ও নবুয়্যত অনুসারী খৃস্টানরা একের পর এক পরাজিত হয়ে চলছে। অনুরূপভাবে আমরা আরবের মূর্তিপূজারীরাও তোমাদেরকে এবং তোমাদের দ্বীনকে ধ্বংস করে ছাড়বো। তারা বাইতুল্লাহর রক্ষক এবং আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন এমন দাবিও তারা করেছিলো। তারা এই ঘটনাবলী দিয়ে মুসলিমদের টিটকারী করছিলো।
এমন একটি সময়ে আল্লাহ তায়ালা সূরে রুম নাজিল করেন। সেখানে তিনি বলেন,
১) আলিফ-লাম-মীম।
২) রোমানরা পরাজিত হয়েছে।
৩) তাদের নিকটবর্তী অঞ্চলে। আর তারা তাদের এ পরাজয়ের পর অচিরেই বিজয়ী হবে।
৪) কয়েক বছরের মধ্যেই। পূর্বের ও পরের সব ফয়সালা আল্লাহরই। আর সেদিন মুমিনরা আনন্দিত হবে।
৫) আল্লাহর সাহায্যে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
৬) আল্লাহর ওয়াদা। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা খেলাফ করেন না। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।
৭) তারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিক সম্পর্কে জানে, আর আখিরাত সম্পর্কে তারা গাফিল।
আল্লাহ তায়াল আল্লাহর রাসূল সা.-কে দিয়ে একটি ঘটনাকে সামনে রেখে দুটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। একটি হচ্ছে, রোমানরা জয়লাভ করবে এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে, মুসলমানরাও একই সময় বিজয় লাভ করবে। আপাত দৃষ্টিতে এ দুটি ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো একটিরও কয়েক বছরের মধ্যে সত্যে পরিণত হবার দূরতম সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছিল না। একদিকে ছিল মুষ্টিমেয় কয়েকজন মুসলমান। তারা মক্কায় নির্যাতিত হয়ে চলছিল। এ ভবিষদ্বাণীর পরও আট বছর পর্যন্ত কোনো দিক থেকে তাদের বিজয় লাভের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না।
অন্যদিকে রোমের পরাজয়ের বহর দিনের পর দিন বেড়েই চলছিল। ৬১৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র মিশর পারস্য সাম্রাজ্যের অধীনে চলে এসেছিল। অগ্নি উপাসক সেনাদল লিবিয়ার ত্রিপোলির সন্নিকটে পৌঁছে তাদের পতাকা গেঁড়ে দিয়েছিল। এশিয়া মাইনরে পারস্য সেনাদল রোমানদের বিতাড়িত ও বিধ্বস্ত করতে করতে বসফোরাস প্রণালীতে পৌঁছে গিয়েছিল।
৬১৭ সালে তারা কনস্ট্যান্টিনোপলের সামনে খিলকদুন দখল করে নিয়েছিল। কায়সার খসরুর কাছে দূত পাঠিয়ে অত্যন্ত বিনয় ও দীনতা সহকারে আবেদন করলেন, আমি যে কোনো মূল্যে সন্ধি করতে প্রস্তুত। কিন্তু তিনি জবাব দিলেন, “এখন আমি কায়সারকে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপত্তা দেবো না যতক্ষণ না তিনি শৃঙ্খলিত অবস্থায় আমার সামনে হাজির হন এবং তার শূলীবিদ্ধ ঈশ্বরকে ত্যাগ করে অগ্নি খোদার উপাসনা করেন।” অবশেষে কায়সার হিরাক্লিয়াস এমনই পরাজিত মনোভাব সম্পন্ন হয়ে পড়লেন যে, তিনি কনস্ট্যান্টিনোপল ত্যাগ করে কার্থেজে (তিউনিস) চলে যাবার পরিকল্পনা করলেন।
কুরআন মাজীদের এ আয়াতগুলো নাযিল হলে মক্কার কাফেররা এ নিয়ে খুবই ঠাট্টা বিদ্রুপ করতে থাকে। হাসি তামাশা করতে থাকে। কুরআন ও আল্লাহর রাসূল সা.-এর ওপর আবু বকরের রা.-এর বিশ্বাস ছিল চূড়ান্ত। তাই মুশরিকদের বিদ্রুপ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি মুশরিকদের বাজি লাগানোর জন্য আহ্বান করেন। এতে উবাই ইবনে খালফ হযরত আবু বকর (রা.)-এর সাথে বাজি রাখে। সে বলে, যদি তিন বছরের মধ্যে রোমানরা জয়লাভ করে তাহলে আমি তোমাকে দশটা উট দেবো অন্যথায় তুমি আমাকে দশটা উট দেবে। নবী (সা.) এর বাজীর কথা জানতে পেরে বলেন, কুরআনে বলা হয়েছে فِي بِضْعِ سِنِينَ আর আরবী ভাষায় بضع শব্দ বললে দশের কম বুঝায়। কাজেই দশ বছরের শর্ত রাখো এবং উটের সংখ্যা দশ থেকে বাড়িয়ে একশো করে দাও। তাই হযরত আবু বকর (রা.) উবাইর সাথে আবার কথা বলেন এবং নতুনভাবে শর্ত লাগানো হয় যে, দশ বছরের মধ্যে উভয় পক্ষের যার কথা মিথ্যা প্রমাণিত হবে সে অন্যপক্ষকে একশোটি উট দেবে।
৬২২ সালে একদিকে নবী (সা.) হিজরত করে মদীনায় চলে যান। অন্যদিকে কায়সার হিরাক্লিয়াস নীরবে কনস্ট্যান্টিনোপল থেকে বের হয়ে কৃষ্ণসাগরের পথে আর্মেনিয়ার দিকে রওয়ানা দেন। সেখানে গিয়ে তিনি পেছন দিক থেকে ইরানের ওপর আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এই প্রতি আক্রমণের প্রস্তুতির জন্য কায়সার গীর্জার কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানান। ফলে খৃস্টীয় গীর্জার প্রধান বিশপ সারজিয়াস খৃস্টবাদকে মাজুসীবাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গীর্জাসমূহে ভক্তদের নজরানা বাবদ প্রদত্ত অর্থ সম্পদ সুদের ভিত্তিতে ঋণ দেন।
হিরাক্লিয়াস ৬২৩ খৃষ্টাব্দে আর্মেনিয়া থেকে নিজের আক্রমণ শুরু করেন। দ্বিতীয় বছর ৬২৪ সালে তিনি আজারবাইজানে প্রবেশ করে জরথুস্ট্রের জন্মস্থান আরমিয়াহ ধ্বংস করেন এবং পারসিকদের সর্ববৃহৎ অগ্নিকুণ্ড বিধ্বস্ত করেন। আল্লাহর কি অপার মহিমা! এই বছরেই মুসলমানরা বদর নামক স্থানে মুশরিকদের মোকাবিলায় প্রথম বিজয় লাভ করে। এভাবে সূরা রূমে উল্লেখিত দু’টি ভবিষ্যদ্বাণীর দশ বছরের সময়সীমা শেষ হবার আগেই একই সঙ্গে সত্য প্রমাণিত হয়।
এরপর রোমান সৈন্যরা অনবরত ইরানীদেরকে পর্যুদস্ত করে যেতেই থাকে। ৬২৭ খৃষ্টাব্দে নিনেভার যুদ্ধে তারা পারস্য সাম্রাজ্যের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়। এরপর পারস্য সম্রাটদের আবাসস্থল বিধ্বস্ত করে। হিরাক্লিয়াসের সৈন্যদল সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে এবং তারা তদানীন্তন পারস্যের রাজধানী তায়াসফুনের (এখন বাগদাদের একটি এলাকা) দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। ৬২৮ সালে খসরু পারভেজের পরিবার তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। তাকে বন্ধী করা হয়। কয়েকদিন পরে কারা যন্ত্রণায় কাতর হয়ে সে নিজেও মৃত্যুবরণ করেন। এ বছরই হুদাইবিয়ার চুক্তি সম্পাদিত হয়, যাকে কুরআন মহাবিজয় নামে আখ্যায়িত করেছে এবং এ বছরই খসরুর পুত্র দ্বিতীয় কুবাদ সমস্ত রোম অধিকৃত এলাকার ওপর থেকে অধিকার ত্যাগ করে এবং আসল ক্রুশ ফিরিয়ে দিয়ে রোমের সাথে সন্ধি করে।
৬২৯ সালে খ্রিস্টানদের “পবিত্র ক্রুশ”কে স্বস্থানে স্থাপন করার জন্য কায়সার নিজে “বায়তুল মাকদিস” যান এবং এ বছরই নবী (সা.) কাযা উমরাহ আদায় করার জন্য হিজরতের পর প্রথম বার মক্কায় প্রবেশ করেন।
এরপর কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণী যে, পুরোপুরি সত্য ছিল এ ব্যাপারে কারো সামান্যতম সন্দেহের অবকাশই ছিল না। এই ঘটনাকে সাক্ষী করে আরবের বিপুল সংখ্যক মুশরিক কুরআন ও আল্লাহর রাসূল সা.-এর প্রতি ঈমান আনে। উবাই ইবনে খালফের উত্তরাধিকারীদের পরাজয় মেনে নিয়ে হযরত আবু বকর (রা.)-কে বাজির একশো উট দিয়ে দিতে বাধ্য হয়।
তিনি সেগুলো নিয়ে মুহাম্মদ সা.-এর খেদমতে হাজির হন। নবী (সা.) হুকুম দেন, এগুলো সাদকা করে দাও। কারণ বাজি যখন ধরা হয় তখন শরীয়াতে জুয়া হারাম হবার হুকুম নাজিল হয়নি। কিন্তু এখন তা হারাম হবার হুকুম এসে গিয়েছিল। তাই জুয়ার অর্থ সাদকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন