১০ সেপ, ২০২১

পর্ব : ৩৯ - বিজয়ের পরে মুসলিমদের করণীয়


মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে সমগ্র আরব নতুন পরিচয় পায়। আরবরা দলে দলে মুসলিম হতে শুরু করে। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা সূরা নাসর নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, //যখন আল্লাহর সাহায্য এসে যায় এবং বিজয় লাভ হয়। আর (হে নবী!) তুমি দেখবে লোকেরা দলে দলে আল্লাহর দ্বীন গ্রহণ করছে। তখন তুমি তোমার রবের হামদ সহকারে তাঁর তাসবীহ পড়ো এবং তাঁর কাছে মাগফিরাত চাও। অবশ্যই তিনি বড় তাওবা কবুলকারী।//

এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বিজয়ের পরের কাজের ব্যাপারে গাইডলাইন দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন বিজয়ের জন্য মহান আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করতে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে। এ মহান ও বিরাট সাফল্য সম্পর্কে মুসলিমদের মনে যেন কোন সময় বিন্দুমাত্রও ধারণা না জন্মায় যে, এসব নিজেদের কৃতিত্বের ফল। বরং একে পুরোপুরি ও সরাসরি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ ও মেহেরবানী মনে করতে হবে। এজন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। মনে ও মুখে একথা স্বীকার করবে যে, এ সাফল্যের জন্য সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর প্রাপ্য।

আর তাসবীহ পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি আমাদের প্রচেষ্টা ও সাধনার ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ ধরনের ধারণা থেকে তাঁকে পাক ও মুক্ত করবে। বিপরীতপক্ষে আমাদের মন এ দৃঢ় বিশ্বাসে পরিপূর্ণ থাকবে যে, আমাদের প্রচেষ্টা ও সাধনার সাফল্য আল্লাহর সাহায্য ও সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তিনি তাঁর যে বান্দার থেকে চান কাজ নিতে পারতেন। তবে তিনি আমার খিদমত নিয়েছেন এবং আমার কাজের মাধ্যমে তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করেছেন, এটা আমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ।

এরপর আল্লাহ বলেছেন, তোমার রবের কাছে ক্ষমা চাও। তিনি তোমাকে যে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা করতে গিয়ে তোমার যে ভুল-ত্রুটি হয়েছে তা যেন তিনি মাফ করে দেন। ইসলাম বান্দাকে এ আদব ও শিষ্টাচার শিখিয়েছে। কোন মানুষের দ্বারা আল্লাহর দ্বীনের যতবড় খিদমতই সম্পন্ন হোক না কেন, তাঁর পথে সে যতই ত্যাগ স্বীকার করুক না এবং তাঁর ইবাদাত ও বন্দেগী করার ব্যাপারে যতই প্রচেষ্টা ও সাধনা চালাক না কেন, তার মনে কখনো এ ধরনের চিন্তার উদয় হওয়া উচিত নয় যে, তার ওপর তার রবের যে হক ছিল তা সে পুরোপুরি আদায় করে দিয়েছে। বরং সব সময় তার মনে করা উচিত যে, তার হক আদায় করার ব্যাপারে যেসব দোষ-ত্রুটি সে করেছে তা মাফ করে দিয়ে যেন তিনি তার এ নগণ্য খেদমত কবুল করে নেন।

এই আদব ও শিষ্টাচার শেখানো হয়েছে মুহাম্মদ সা.-কে। অথচ তাঁর চেয়ে বেশি আল্লাহর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনাকারী আর কোন মানুষের কথা কল্পনাই করা যেতে পারে না। তাহলে এক্ষেত্রে অন্য কোন মানুষের পক্ষে তার নিজের আমলকে বড় মনে করার অবকাশ নেই। আল্লাহর যে অধিকার তার ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল তা সে আদায় করে দিয়েছে এ অহংকার করার কোন সুযোগ নেই। এই আলোচনার শিক্ষা এই যে, নিজের কোন ইবাদাত, আধ্যাত্মিক সাধনা ও দ্বীনি খেদমতকে বড় জিনিস মনে না করে নিজের সমগ্র প্রাণশক্তি আল্লাহর পথে নিয়োজিত ও ব্যয় করার পরও আল্লাহর হক আদায় হয়নি বলে মনে করা উচিত।

এভাবে যখনই মুসলিমরা কোন বিজয় লাভে সমর্থ হবে তখনই এ বিজয়কে নিজেদের কোন কৃতিত্বের নয় বরং মহান আল্লাহর অনুগ্রহের ফল মনে করবে। এজন্য গর্ব ও অহংকার না করে নিজেদের রবের সামনে বিনয়ের সাথে মাথা নত করে হামদ, সানা ও তাসবীহ পড়তে এবং তাওবা ও ইসতিগফার করতে থাকবে।

মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ সা. তারবিয়াত ও তাবলীগ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন বেশি। এই সময় আরবের বিভিন্ন গোত্র থেকে প্রতিনিধিদল তাঁর কাছে আসতে থাকে। তিনি তাদের অভ্যর্থনা জানান ও দাওয়াত পেশ করেন। একইসাথে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তিনি আরবের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসক নিযুক্ত করেন। রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতে আসলে চারটি কাজ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া আছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদেরকে আমি যদি পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দান করি তাহলে এরা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং খারাপ কাজে নিষেধ করবে। [সূরা হজ্ব : ৪১]

মক্কা বিজয়ের পর তাবলীগ ও তারবিয়াতের মাধ্যমে মুহাম্মদ সা. ২য় কাজটি ছাড়া বাকি তিনটি কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছিলেন। নবম হিজরির মহররম মাসে মুহাম্মদ সা. যাকাত আদায়ের ব্যাপারে উদ্যোগী হলেন। এজন্য তিনি আরবকে ১৬ টি ভাগ করে ১৬ জন যাকাত কালেক্টর নিয়োগ করলেন। রাসূল সা. আগেও মদিনা ও বিজিত অঞ্চল থেকে যাকাত আদায় করেছেন। তবে এভাবে যাকাত কালেক্টর নিয়োগ দেওয়া মক্কা বিজয়ের পরেই হয়েছে।

এর মধ্যে নজদের বনু তামিম জিজিয়া দিয়ে অস্বীকার করলো। মুহাম্মদ সা. তাদের বিরুদ্ধে সৈন্য পাঠালেন। মুসলিমরা সৈন্যরা আক্রমণ করে কিছু বন্দী গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসলেন। তাদের আটক করে রাখা হলো। পরে বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে বনু তামিম গোত্রের ১০ জন সর্দার এলেন। তারা মুহাম্মদ সা. সাথে উঁচু গলায় ও অহংকারী ভাব নিয়ে কথা বলতে লাগলো। তারা তাদের প্রচলিত ধর্মের ব্যাপারে যুক্তি প্রদান করতে লাগলো। মুহাম্মদ সা. চাইলে তাদের সাথে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে তাদের কূটনৈতিকভাবে মুকাবিলা করলেন যেহেতু তারা তাই চেয়েছে।

বনু তামিম তাদের বক্তা আতা ইবনে হাজেবকে সামনে এগিয়ে দিলেন। তিনি বক্তৃতা করলেন। মুহাম্মদ সা. তার মোকাবেলার জন্যে সাবেত ইবনে কায়েস শাম্মাস রা.-কে আদেশ দিলেন। তিনি জবাবী বক্তৃতা দিলেন। বনু তামিম সর্দাররা এরপর তাদের গোত্রের কবি জায়কাল ইবনে বদরকে সামনে এগিয়ে দিলেন। তিনি অহংকার প্রকাশক কিছু কবিতা আবৃতি করলেন। তার কথার জবাব দিলেন কবি হাসসান বিন সাবিত রা.। এরপর বনু তামিমের সর্দাররা যুক্তিতে হার মানলো ও ইসলাম গ্রহণ করলো।

আরবের তাঈ গোত্রের লোকেরা কালাস নামের মুর্তির পূজা করতো। আরব থেকে মুর্তি উচ্ছেদ হলেও এখানে থেকে যায়। মুহাম্মদ সা. আলী রা.-কে সৈন্যাবাহিনীসহ পাঠালেন তাদের কাছে দাওয়াত দিতে। তারা যুদ্ধ করতে চাইলে আলী রা. তাদের সাথে যুদ্ধ করেন ও তাদের পরাজিত করেন। আলী রা.-এর নেতৃত্বে একশত উট এবং পঞ্চাশটি ঘোড়াসহ দেড়শত সৈন্য রওয়ান হন তাঈ গোত্রের উদ্দেশ্যে। তারা সাদা কালো পতাকা বহন করেন। যুদ্ধের শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই কালাস নিয়ন্ত্রণে আসে। আলী রা. সেই মূর্তি ভেঙে ফেলেন।

তাঈ গোত্রে প্রধান ছিলেন বিখ্যাত দানশীল হাতিম তাঈ-এর পুত্র আদি ইবনে হাতেম তাঈ। তিনি পরাজিত হয়ে সিরিয়ার পথে পালিয়ে যায়। মুসলমানরা কালাস মূর্তির ঘরে তিনটি তলোয়ার এবং তিনটি বর্ম পান। তাঈ গোত্রের লোকেরা মক্কার লোকদের মতো মুশরিক ছিল না। তারা ছিল খৃস্টান। খৃস্টান হয়েও তারা মুর্তিপূজাসহ নানান ধরণের অপসংস্কৃতি তাদের ধর্মে যুক্ত করে। আটকদের মধ্যে হাতেম তাঈ-এর কন্যাও ছিলেন।

মুসলমানরা আলী ইবনে আবু-তালিব রা.-এর নেতৃত্বে তাঈ গোত্রকে পরাজিত করে কিছু যুদ্ধবন্দীকে মদিনায় নিয়ে আসেন। বন্দীদের মধ্যে থাকা হাতেম তাঈ-এর কন্যা রাসুলুল্লাহ সা.-এর সঙ্গে সাক্ষাতের দাবি জানালেন। রাসুলুল্লাহ সা. তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তাঁকে একটি উট, কিছু টাকা দিলেন এবং বললেন, পছন্দের যেকোনো জায়গায় তিনি নিরাপদে যেতে পারবেন। তিনি তাঁকে মুক্তি দিয়ে দিলেন শুধু হাতেম তাইয়ের মতো বিখ্যাত দানশীলের মেয়ে হওয়ার কারণে।

মুক্ত হয়ে তিনি তার ভাইয়ের কাছে গেলেন। প্রথমে তিনি রাগ করলেন তাকে রেখে পালিয়ে আসার কারণে, তারপর ভাইকে পরামর্শ দিলেন মুহাম্মদ সা.-এর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য। আদিকে বললেন, ‘তিনি যদি নবী হন, তাহলে তাঁর প্রতি বিশ্বাস রেখে তাঁর ধর্ম যত তাড়াতাড়ি গ্রহণ করবে, ততই তোমার মঙ্গল হবে। আর যদি তিনি রাজা হন, তাহলে কিছু অনুগ্রহ বা সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করতে পারো।’

আদি ইবনে হাতেম নিজেই বর্ণনা করেন, ‘মোহাম্মদ সা.-এর চেয়ে আর কেউ আমার কাছে এত বিদ্বেষের ছিলেন না, কিন্তু আমি নিজেকে বললাম, গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেখি না, যদি তিনি সত্য বাণী বলেন, তাহলে সরাসরি তাঁর কাছ থেকে শুনব আর যদি তা না হয়, তাতে আমার তেমন ক্ষতির কিছু নেই।’ তাই তিনি ৯ম হিজরিতে মদিনায় গেলেন। মদিনায় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু লোক তাঁকে চিনে ফেলে চিৎকার করে বলতে লাগল, ‘উনি হাতেম তাইয়ের ছেলে আদি’ এবং লোকেরা তাঁকে ঘিরে ফেলল। তারপর তারা তাঁকে রাসুলুল্লাহর সা. কাছে নিয়ে গিয়ে বলল, ‘উনি হাতেম তাইয়ের ছেলে আদি।’

নবী সা. আদিকে বললেন, ‘ইয়া আদি, আসলিম তুসলিম’ (হে আদি, ইসলাম গ্রহণ করো এবং তুমি নিরাপদ হবে)। আদি উত্তর দিলেন, ‘আমি তো একটি ভালো ধর্মের অনুসারী।’ রাসুলুল্লাহ সা. আরও দুইবার বললেন এবং আদি একই উত্তর দিলেন।

তখন রাসুলুল্লাহ সা. বললেন,

- ‘ইয়া আদি, আনা আলামু বি দিনিকা মিনকা’ (হে আদি, আমি তোমার ধর্ম সম্বন্ধে তোমার থেকে বেশি জানি)। ‘তুমি কি তোমার গোত্রের প্রধান নও?’

- ‘হ্যাঁ।’

- ‘তাদের আয়ের চার ভাগের এক ভাগ কর হিসাবে নাও?’

- ‘হ্যাঁ।’

- ‘তুমি কি জানো যে তোমার নিজের ধর্ম এটা নিষেধ করে?’

আদি কিছুটা লজ্জা পেলেন। রাসুলুল্লাহ সা. আদির হাত ধরে তাঁর ঘরের দিকে রওনা দিলেন।

আদি বলেন, ‘পথিমধ্যে এক শিশুসহ একজন বৃদ্ধা ওনাকে থামালেন এবং তাঁর সমস্যার কথা বলতে লাগলেন। রাসুলুল্লাহ সা. নারীটি আশ্বস্ত হওয়া পর্যন্ত কথা বললেন। আমি তখন চিন্তা করছিলাম এই লোক রাজা নন। আমরা তাঁর ঘরে এলে উনি এক পুরাতন ছেঁড়া মাদুর আমার নিচে দিয়ে বসতে বললেন। আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে তাকিয়ে আর কিছু না দেখে তাঁকে বসতে বললাম। তিনি জোর করে আমাকেই বসতে বললেন। আমি বসলে উনি মাটিতেই বসলেন। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি আর কোনো প্রভুকে জানি কি না আল্লাহ ছাড়া?

আমি উত্তর দিলাম, না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমি আর কাউকে জানি কি না আল্লাহ থেকে বেশি ক্ষমতাবান ও শক্তিশালী? আমি আবার বললাম, না। তখন তিনি বললেন, ইয়াহুদরা মাকদুব ও নাসারারা মিসগাইডেড এবং ভুল যা তারা বিশ্বাস করে।

‘তারপর রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, তুমি কি আল-হিরার নাম শুনেছ?

আমি বললাম, হ্যাঁ, শুনেছি। তবে কখনো যাইনি ওই শহরে।

মুহাম্মদ সা. বললেন, প্রকৃতপক্ষে এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র, যখন কোনো মহিলা আল-হিরা শহর থেকে মক্কায় কাবা তাওয়াফ করার জন্য কোনো নিরাপত্তাসঙ্গী ছাড়াই আসবে। তার ভয়ের কোনো কারণ থাকবে না এবং সত্যি সত্যিই এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র যখন কিসরার ধনভান্ডার আমাদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। আমি তখন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কিসরা? হরমুজের ছেলে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, কিসরা, হরমুজের ছেলে। আর প্রকৃতপক্ষে এটাও সময়ের ব্যাপারমাত্র যখন মানুষ মদিনার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সাদকা দিতে চাইবে কিন্তু একজনকেও সাদকা দেওয়ার যোগ্য পাবে না।

আদি বলেন, মুসলমান রাজ্যের শান্তি ও নিরাপত্তা নিজে দেখেছি এবং আমি নিজে অংশগ্রহণ করেছি টেসিফান সাসানিদ রাজ্যের রাজধানী বিজয়ের যুদ্ধে। যাই হোক, আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি। আমি প্রায়ই রাসুলুল্লাহর সা. সঙ্গে সাক্ষাৎ করতাম। একবার আমি তাঁকে আমার পিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আমার বাবা তাঁর আত্মীয়স্বজনদের প্রতি ছিলেন সদয়, দয়ালু এবং মানুষের প্রতি খুব দানশীল ছিলেন; তিনি কি তাঁর কাজের প্রতিদান-পুরস্কার পাবেন? রাসুলুল্লাহ সা. উত্তরে বললেন, তোমার বাবা যা কামনা-আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন এবং তিনি তা পেয়েছেন যা চেয়েছিলেন।’

এই হাদিসের মানে, কেউ যদি নাম-যশের, দুনিয়ায় সুখ্যাতির জন্য করে, তবে তা সে দুনিয়াতেই পাবে, আর কেউ যদি আল্লাহর কাছে পাওয়ার জন্য করে, তাহলে তার পাওনা আদায় ওইখানেই হবে। আদি ইবনে হাতেম রা. বেঁচেছিলেন অনেক দিন। প্রায় ১২০ বছরের কাছাকাছি। তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলীর রা. সঙ্গে মুয়াবিয়ার রা. বিরুদ্ধে সিফফিনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।

আদি রা. তাঁর বৃদ্ধ বয়সে সবসময় বলতেন, আমি দেখেছি উটের পিঠে চড়ে আসা একজন মহিলা হিরা থেকে এসে কারাঘর তাওয়াফ করেছে কোনো সাহায্যকারী ছাড়াই। আল্লাহ ছাড়া তার অন্য কারো ভয় ছিলো না। কিসরার ধন ভান্ডার যার জয় করেছিলেন, আমি নিজেই ছিলাম তাদের মধ্যে একজন। তোমরা যদি দীর্ঘজীবী হও, তবে আবুল কাসেমের আরেকটি কথারও সত্যতার প্রমাণ পাবে। তিনি বলেছেন, সাদকা দেওয়ার জন্য লোকজন সম্পদ নিয়ে ঘুরবে, সাদকা নেওয়ার জন্য কাউকে পাওয়া যাবে না।

1 টি মন্তব্য: