২০০৮ সালের ডিসেম্বরে মইন ইউ আহমেদ পাতানো নির্বাচন করে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় বসায় এবং তার সকল অপকর্মের দায়মুক্তি নিয়ে নেয়। তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারা বন্ধ হয়ে গেছে। আওয়ামীলীগ কখনো তাদের পোষা সন্ত্রাসীদের দিয়ে কেন্দ্র দখল করে ভোট দিয়েছে। কখনো প্রিসাইডিং অফিসারদের দিয়ে ভোট গ্রহণের আগেই ব্যালট বক্স পূর্ণ করে ফেলেছে। মোটকথা এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিনা ভোটের নির্বাচন ৫ জানুয়ারি ২০১৪
৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিলো বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন। এই পাতানো নির্বাচনে নির্বাচনের আগেই আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ১৫৪ আসনে নির্বাচনই হয়নি। দেশের প্রায় সব'কটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বয়কট করেছে। শেখ হাসিনা নিজেই কোনো আসনে জয়ী হয়ে আসেনি। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দাবী মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে এই নির্বাচনে।
নির্বাচন ছাড়াই ১৫৪ এমপি (সংখ্যাগরিষ্ঠ) সংসদে
১. বিনা ভোটে ১৫৪ এমপি নির্বাচনের উপাখ্যান
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নানা নাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে একটি পাতানো ও নজিরবিহীন নির্বাচনের মূল পর্ব সম্পন্ন হয়ে গেছে সাধারণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তারিখ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির অনেক আগেই। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ জাতি জেনে গেছে যে ৩০০ সংসদীয় আসনের ১৫৪টিতেই শাসকদল আওয়ামী লীগের এবং মহাজোটভুক্ত অন্যান্য দলকে দান করা প্রার্থীরা ছাঙা অন্য কোনো প্রার্থী নেই। ভোটার ও ভোটহীন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক এদের বিজয়ী ঘোষণা করাটাই বাকি। নির্বাচনের মূল পর্ব বললাম এই কারণে যে সব গণতান্ত্রিক দেশেই নিজ নিজ দেশের সংবিধান বা কনভেনশন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে (প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত দল বা জোট সরকার গঠন করে। সব দলের। অংশগ্রহণমূলক একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীরাই সরকার গঠন করে পরবর্তী মেয়াদের জন্য। এখন আমাদের বাকি ১৪৬ আসনে ভোটগ্রহণ করা হোক বা না হোক, যাক বা না যাক, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্ব হাতছাঙা হওয়ার সব আশঙ্কাই কেটে গেল। ভোটার ও ভোট ছাঙা ৩০০ আসনের ১৫৪টিতেই জিতে যাওয়ার এই নজিরবিহীন নির্বাচন গিনেস বুকে স্থান পাওয়ার কথা।
কালেরকণ্ঠ, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩
২. ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ জন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান ১৫৩ জন। ৫৯ জেলায় বাকি ১৪৭ আসনে যে চার কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জন ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই ভোট দিতে যাননি। দেশের ৩৯টি কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। ১৬টি কেন্দ্রে ভোট পড়ে ১ থেকে ৬৩টি। কোনো কোনো কেন্দ্রে বেলা ২টা পর্যন্তকোনো ভোট না পঙলেও পরবর্তী দুই ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ভোট পড়ে। নির্বাচনের দুই দিন পর নির্বাচন কমিশন ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দাবি করে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা জানায়, নির্বাচনে ১৫ থেকে ২০ ভাগের বেশি ভোট পড়েনি। অন্য দিকে বিএনপি দাবি করে নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
প্রবাসবাংলা, ৪ জানুয়ারি ২০১৫
ভোটারবিহীন নির্বাচন
১.৩৯ কেন্দ্রে কোনো ভোটই পড়েনি
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানের ৩৭টি কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। এর মধ্যে শুধু লালমনিরহাট সদর আসনেই ২৭টি কেন্দ্র ভোটারশূন্য ছিল। কেন্দ্রগুলো র সংশ্লিষ্টকর্মকর্তারা এসব খবর নিশ্চিত করেন। লালমনিরহাট-৩ আসনের ৮৯ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৭টিতে কোনো ভোটই পড়েনি। বঙবাঙী ইউনিয়নের সাতটি কেন্দ্রের সব কটি, পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের আটটির মধ্যে ছয়টি, কুলাঘাট ইউনিয়নের আটটির মধ্যে ছয়টি, মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের নয়টির মধ্যে ছয়টি এবং হারাটি ইউনিয়নের সাতটির মধ্যে দুটি কেন্দ্রে কেউ ভোট দিতে যায়নি।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
২. ২৬২৪ ভোটারের মধ্যে ভোট দিলেন ২ জন
৫ জানুয়ারি ২০১৪ জনাব মাহবুবুল হক চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুশরিভুজা গ্রাম কেন্দ্রের ফলাফল শিট ৫ জানুয়ারি ২০১৪ বিকেল পাঁচটায় শহর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন। তাঁর কেন্দ্রে দুই হাজার ৬২৪ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র দুজন।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৩. লালমনিরহাটের ৩১টি কেন্দ্রে কোনো ভোট পড়েনি
লালমনিরহাটের ২টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে লালমনিরহাট-১ আসনে ৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩১টি কেন্দ্রে কোনো ভোট পড়েনি। এ আসনে মোট ভোটারসংখ্যা ২ লাখ ৪ হাজার ৩০০। এ ছাঙাও ১নম্বর আসনে ৫টি কেন্দ্রে কোনো ভোট পড়েনি বলে জানা যায়। এখানে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় মোট ভোটারসংখ্যা ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫৭৭ জন।
যুগান্তর, ৫ জানুয়ারি ২০১৪
৪. রাজশাহী দুটি কেন্দ্র ভোট পঙল ১৩ ভাগ।
৫ জানুয়ারি ২০১৪ রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ করা হলেও বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম। গতকাল সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্তচারঘাট উপজেলার হলিদাগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী ভোটার কেন্দ্র হলিদাগাছি দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় পুরুষ ভােটারদের কেন্দ্রঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এই দুই কেন্দ্রের পাঁচ হাজার ১০৯ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র ৬৬৩ জন ভোট দেয়। অর্থাৎ ওই দুই কেন্দ্রে ১৩ শতাংশ ভোট পড়ে।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৫.বগুড়া-৪ ঘন্টায় ভোট পড়েছে ১৮টি
বগুড়া-৪ আসনের একটিকেন্দ্রে আট ঘন্টায় ভোট পড়েছে ১৪২টি। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ছয়টি। এ কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন চার হাজার ৩২০ জন। এদিকে পাশের কেন্দ্র কাহালু পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা একটা পর্যন্ত১১৬টি ভোট পড়ে। এ কেন্দ্রে ভোটার প্রায় চার হাজার।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৬. ২৬২৭ জনের মধ্যে ভোট দেয় ২৭ জন
নাটোর-৩ (সিংঙা) আসনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সরেজমিনে সকাল নয়টা ২১ মিনিটে সিংঙার মাঝগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কোনো ভোটারকে দেখা যায়নি। এখানে দুই হাজার ৬২৭ জন ভোটারের মধ্যে সকাল সাঙে নয়টা পর্যন্ত২৭ জন ভোট দেয়।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৭. সাতক্ষীরায় ভোটারবিহীন ভোট
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের গোদাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা গেল প্রার্থীদের কোনো পোলিং এজেন্ট নেই। নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কেন্দ্রের বাইরে দাঁডড়য়ে আছেন। খোঁজ নিয় জানা গেল এ কেন্দ্রের এক হাজার ৮৮৫ জনের মধ্যে একজনও ভোট দিতে আসেননি। আগরদাঁডড় কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, এখানে একটি ভোটও পড়েনি। ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৮৭৬। শিয়ালডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শঙ্কর রায় বলেন, এ কেন্দ্রে দুই হাজার ৩৬৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র একজন। ভোমরা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিন হাজার ৬৬৬ টি ভোটের মধ্যে বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্তভোট পড়েছে সাতটি।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৮. ফাঁকা কেন্দ্রে জাল ভোটের উৎসব
ব্রাহ্মনবাড়িয়া শহরের কান্দিপাঙার তোফায়েল আজম কিন্ডারগার্টেন কেন্দ্রে কোনো ভোটার নেই। এ সময় একটি বুথের ভেতরে একদিকে ব্যালট পেপার বই নিয়ে একজন সহকারি প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কয়েকজন নারী ও পুরুষ কর্মী একসঙ্গে জাল ভোট দিচ্ছেন। আর দু-তিনজন সেই ব্যালট পেপার ছিঙে তা ভাঁজ করে বাক্সে ফেলছেন। আর বুথের দরজায় পাহারা দিচ্ছেন পুলিশের সদস্যরা।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৯. ৫ হাজার ভোটের মধ্যে পড়ে ১৭৫টি
৫ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ৯-১১টা পর্যন্তঢাকা-৫ যাত্রাবাঙী আইডিয়াল স্কুলে ৫ হাজার ভোটের মধ্যে পড়ে ১৭৫টি ভোট। এখানে নৌকা প্রতীকে হাবিবুর রহমান মোল্লা ও মনির হোসেন কমল সাইকেল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এখানে আকরাম নামের এক ভোটারবলেন, এমন বেকুব আর বেআকল নির্বাচন কমিশনের কোনো দরকার নেই। তাই এ কমিশনকে বিলুপ্তি ঘোষণা করা হোক।
সোনার বাংলা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
১০. ২৫০০ ও ৩৫০০ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় ১৮৫ ও ২২৫টি
৫ জানুয়ারি ২০১৪ ঢাকা-৪ শ্যামপুর-কদমতলী নির্বাচনী আসনে জাতীয় পাটি সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা লাঙ্গল ও ড. মো. আওলাদ হোসেন হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লঙাই করেন। এ আসনের দয়াগঞ্জ, কাতিটোলা ভোট কেন্দ্রে যথাক্রমে ২৫০০ ও ৩৫০০ ভোটের মধ্যে ১১ টা ৩০ মিনিটে কাস্ট হয় মাত্র ১৮৫ ও ২২৫টি ভোট। তামিরুল মিল্লাত মাদরাসায় সকাল ১০টা পর্যন্তকোনো ভোট পড়েনি বলে সেখানকার কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান। এখানে দেখা যায়, ভোটারদের কোনো উপস্থিতি নেই। এখানে অবশেষে ১৭৫৫ ভোট কাস্টিং দেখানো হয়েছে।
সোনার বাংলা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
১১. ঢাকা-৬ আসন ভোটারহীনভাবে নির্বাচন
৫ জানুয়ারি ২০১৪ সূত্রাপুর-কোতোয়ালি-গেন্ডারিয়া-ওয়ারি-বংশালে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ লাঙ্গল ও সাইদুর রহমান সাইদ স্বতন্ত্র হাতি মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। সূত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় বসে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাগণ সময় কাটাচ্ছে।
সোনার বাংলা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
১২. দুই ঘণ্টায় দুইটি ভোট পড়েছে।
৫ জানুয়ারি ২০১৪ ঢাকার নারিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় কেন্দ্রে প্রথম দুই ঘণ্টায় দুইটি ভােট পড়েছে। দাযড়ত্বে থাকা কর্মকর্তাগণ অলস সময় পার করছেন। এভাবে আশপাশের আরও কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কোথাও ৫টি, কোথাও ৭টি এমন ভোট পড়েছে।
সোনার বাংলা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
১৩. ভোটারের চেয়েও দলীয় লোকের সংখ্যাই অধিক
ঢাকা-৭ আসনে লালবাগ-বংশাল-চকবাজার থানা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী সেলিম ও আ’লীগের ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন লঙাই করে। এ আসনের ইমামগঞ্জ স্কুলে গিয়ে দেখা যায় ভোটারের চেয়ে হাজী সেলিমের হয়ে কাজ করা লোকের সংখ্যাই অধিক। এখানকার প্রিজাইডিং অফিসার সহিদুল ইসলাম জানায়, দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত১৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সোনার বাংলা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
১৪. ময়মনসিংহ ৬ এ ১০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছে
৫ জানুয়ারি ২০১৪ ময়মনসিংহ ৬ ত্রিশালের চক পাঁচ পাঙা ভোট কেন্দ্রে ১৭২০টি ভোটের বিপরীতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত৪০টি ভোট পড়ে। অপরদিকে নওধার প্রাথমিক স্কুলে ২৬০০ ভোটের মধ্যে ৩০০ ও সতের পাঙা গ্রামে ২২০০ ভোটের মধ্যে ৩৫০টি ভোট পড়ে। ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্স (ফেমা)র প্রধান মুনিরা খান জানিয়েছেন, নির্বাচনে সব মিলিয়ে ১০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছে।
সোনার বাংলা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
১৫. বাংলাদেশে ভোটারবিহীন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ
ঢাকার আজিমপুরের ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল কেন্দ্রে ১৯৭৪ জন ভোটারের মধ্যে বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্তভোট দিয়েছন মাত্র ২৫০জন। একই সময়ে সদরঘাটের মুসলিম হাইস্কুল কেন্দ্রের ২,৫০০ জন পুরুষ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৫০০জন এবং ২৩৪৫ জন মহিলা ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৬০ জন। ঢাকার পল্লবীতে বঙ্গবন্ধু কলেজ কেন্দ্রে মোট ৯৭০০ জন ভোটারের মধ্যে সকাল সাঙে দশটা পর্যন্তসেখানে ভোট দিয়েছন ২১২ জন। অন্যদিকে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজ কেন্দ্রে একটি বুথে ভোটার সংখ্যা ৩৪০০। কিন্তু বেলা ১১টা পর্যন্তসেই বুথে ভোট পড়েছ ২৫টি।
বিবিসি বাংলা, ৫ জানুয়ারি ২০১৪
ভোট জালিয়াতি
১. শেরপুর জাল ভোট ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ
শেরপুর-২ (নকলা ও নালিতাবাঙী) আসনে ৫০ টি কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি, জাল ভোট ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার দুই ঘন্টা আগে নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউজ্জামান বাদশা।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪।
২. জাল ভোট দেয়ার সময় তিন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আটক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে সরাইল উপজেলার উচালিয়াপাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতীকে সিল মারার সময় তিন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে হাতেনাতে আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাঁরা হলেন কোহিনুর বেগম, জোবেদা বেগম ও নাসিমা বেগম। প্রথমজনকে পাঁচ বছর ও অন্য দুজনকে তিন বছর করে কারাদন্ড দেন আদালত।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৩. ব্যালট পেপার ছিনতাই, ভোট গ্রহণ স্থগিত
কুডড়গ্রাম-২ আসনের রৌমারী উপজেলার একটি ও কুডড়গ্রাম-২ আসনের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার একটি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের পর ওই দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৪. ব্যালট বাক্স ছিনতাই
গাইবান্ধা-২ সদর আসনের চাপাদহ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রওশন আলী জানান, সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর শতাধিক লোক এসে হামলা চালিয়ে সাতটির মধ্যে ছয়টি ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এর পর থেকে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৫. বরগুনা-১-এ ১২ টি কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের জাল ভোট প্রদান।
বরগুনা-১(সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে তালতলী উপজেলার চরপাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালতলী বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাবতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাওঙা-লোদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একে স্কুল, আমতলী মাদ্রাসা, পাতাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ অন্তত ১২ টি কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথের লোকজন জাল ভোট দেয়।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৬. নৌকার সমর্থকদের ইচ্ছামতো জাল ভোট প্রদান।
বরগুনা-২ (বামনা-বেতাগী-পাথরঘাটা) আসনে বেলা ১১ টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার সবগুলো কেন্দ্র থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন শিকদারের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকার সমর্থকেরা ইচ্ছামতো ব্যালট নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারে। দুপুর ১২টার পর বামনা ও বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্র একইভাবে দখল করে নেয় আওয়ামী লীগের সমর্থক, নেতা ও কর্মীরা।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৭. ভোটার-খরা কাটালেন ছাত্রলীগ কর্মীরা।
বরগুনা-২ আসনে সকাল থেকে বেলা একটা পর্যন্তকেন্দ্রের ব্যালট বাক্সে জমা পড়ে মাত্র ১৬৯ টি ভোট। তবে শেষ বিকেলে ভোটারের খরা কেটে যায়। শত শত জাল ভোট দিয়ে সেটি পুষিয়ে দেন কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৮. জাল ভোটের পরও ভোট কম
ঢাকা-৫ আসনের দুটি নির্বাচনী কেন্দ্র স্থাপন করা হয় রাজধানীর শ্যামপুরের দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। দুটি কেন্দ্রের মোট ভোটার চার হাজার ৪৯৮ জন। কিন্তু ভোট দিয়েছেন মাত্র ৭১২ জন। ওই কেন্দ্রে বেলা আঙাইটার পর থেকে বেশ কিছু জাল ভোট দিতে দেখা যায়।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
৯. বরগুনায় ব্যাপক জাল ভোট বরিশাল দুপুর সাঙে ১২ টায় বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর উত্তর ভংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন কিশোর ভোট দিচ্ছে। ওই কেন্দ্রসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র মূলত ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
১০. মাগুরা-২ আসনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক ব্যালট পেপার ছিনতাই
মাগুরা-২ (শালিখা-মহম্মদপুর ও সদরের একাংশ) আসনে জেলা সদরের তিনটি কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং মুহম্মদপুর উপজেলার একটি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স লুট হয়। এ ছাঙা সদর উপজেলার শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের তিন শতাধিক নেতাকর্মী এসে ইচ্ছামতো সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে দেয়।
প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৪
১১. তাবিথের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট আলালের ওপর ককটেল হামলা
ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের গাড়িতে ৫টি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে
১ ফেব্রুয়ারী ২০২০/ কালেরকন্ঠ
১২. কেন্দ্রে ভোটার বেড়েছে, ছিল অনিয়ম সংঘর্ষও
আঙ্গুলের ছাপ না আসায় অনেকে ভোট দিতে পারেননি। ভোটের গতি ছিল মন্থর। দিনভর সংঘর্ষের এবং অনিয়মের মধ্য দিয়ে চলছে নির্বাচন।
২৮ ডিসেম্বর ২০২০/ প্রথম আলো
মিডনাইট নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮
গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। দেশী-বিদেশী ‘রাজনৈতিক জ্যোতিষী’দের মতামত তো বটেই, শেখ হাসিনা সরকারের পূর্বাভাস কিংবা সরকারের অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও উপদেষ্টা শেখ সজীব ওয়াজেদ জয়ের পূর্ব ঘোষণা ডিঙ্গিয়ে মোট ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করেছে। এর মধ্যে শরিক দল জাতীয় পার্টির জয় ২০টিতে। বিএনপি পেয়েছে পাঁচটি, গণফোরামের দু’টিসহ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের আসন সংখ্যা মাত্র সাতে দাঁড়িয়েছে। সব ভবিষ্যদ্বাণীকে ছাপিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট এখন ‘একাকার’। এই নির্বাচনের বিশেষত্ব হলো হাসিনার আওয়ামী সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলে নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স পূর্ণ করে রেখেছে। জনগণকে ভোট দিতে দেয়া হয় নি।
গায়েবি মামলা ও বিরোধী দলকে নির্যাতন
বিরোধী দলীয় জোট ঐক্যফ্রন্ট আশায় ছিল, জনগণ মাঠে নামবে এবং কাড়্ক্িষত ফসল ঘরে আসবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার খুবই জোরগলায় বলেছিলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কোনো মামলা হবে না বা গ্রেফতার করা হবে না। তারপরও প্রতিদিনই মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারও করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের আগ মুহূর্তে পুলিশপ্রধানের সাথে সুর মিলিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার গায়েবি মামলাকে জায়েজ করার জন্য বলেছিলেন, ফৌজদারি মামলা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার না করার জন্য পুলিশকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশকে পাকাপোক্ত করলেন পুলিশ প্রধান এ কথা বলে যে, ফৌজদারি মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। ফলে কথাটির মানে দাঁড়াল, গায়েবি মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা যাবে।
মিথ্যা মামলায় অনেককে আটক করা হয়। অনেকের নামে আগেই আদালতে প্রহসনের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিছু মানুষকে গুম করা হয়েছে। নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রাণশক্তি, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্তদেয়া হয়েছে। এ ভয়েই অনেকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সাহস করেননি। ভোটকেন্দ্রে না যেতে হুমকি দেয়া হয়েছে ভোটারদেরও। গ্রামে মহিলা ভোটারদের ভোট না দিতে ভয় দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আর যারা ভোট দিতে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছে, তাদেরকে হুমকি কিংবা পুলিশ দিয়ে বাধা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের ভেতরে আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে।
বিএনপি নেতাকর্মী-সমর্থকদের গায়েবি মামলার আসামি করা হয়েছে এবং যাদের আসামি করা হয়নি, নির্বাচনের আগে সাদা পোশাক ও পোশাকি পুলিশ বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করেছে এবং আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা পুলিশের ছত্রছায়ায় বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি ও ভাঙচুর করেছে। বিএনপি প্রার্থীদের নিরাপত্তার জন্য নির্বাচন কমিশন কার্যত কোনো ভূমিকা গ্রহণ করেনি। বিএনপির ভোটার দেখলে তাদের ভোট দিতে দেয়া হয়নি, ব্যালট পেপার রেখে নিজেরাই নৌকা মার্কায় সিল মেরেছে। আগের রাতেই ব্যালটে সিল মারার অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে করা হয়েছিল। বিএনপি প্রার্থীদের ওপর সরকারি দলের হামলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো প্রতিকার করেনি, বরং এটাকে উৎসাহিত করেছে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা বলে। ‘বিচ্ছিন্ন’ শব্দটি নির্বাচন কমিশনের সৃষ্টি শুধু ক্ষমতাসীন দল ও সরকারি বাহিনীর তান্ডবকে বৈধ করার জন্য। এ জন্যই কবির ভাষায় বলতে হয়- ‘যারা অন্ধ আজ চোখে বেশি দেখে তারা’। অর্থাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নাকি সুষ্ঠু হয়েছে।
বিএনপির অভিযোগ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর, অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ততাদের ওপর ২,৮৯৬টি হামলা হয়েছে যাতে ন'জন নিহত হন, আহত হন ১৩ হাজার দাবি করা হয়, অন্তত ১২ জন প্রার্থীর ওপর সরাসরি হামলা হয়েছে এছাড়া ১০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়, ১৬ জন প্রার্থীকে কারাগারে পাঠানো হয় আর নির্বাচনের আগের দিন, মানে শনিবার রাতে আরো এক হাজার জনকে আটক করা হয় বলে জানা যায়
ওদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করে যে, তাদের ওপর হামলায় আওয়ামী লীগের ছ'জন নিহত হয়েছেন আহত হয়েছেন ৪৪৫ জন শুধু তাই নয়, তাদের গাড়িবহর ও নির্বাচনি কেন্দ্রে ১৭৮টি হামলার ঘটনা ঘটেনে আর গুলি ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে ৫৮টি নির্বাচনের দিন, রবিবার, বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষের ১০০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন সহিংসতায় ১৮ জন নিহতও হন আহত হন ২০০ জন ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৮ আসনে নির্বাচন হন গাইবন্ধার একটি আসনে নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায়, ঐ আসনের নির্বাচন হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি
সেনাবাহিনীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
‘যুক্তরাষ্ট্রের উইলসন সেন্টারের সিনিয়র স্কলার ও রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসের নিকৃষ্ট নির্বাচন হলো বাংলাদেশের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন। নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ও কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে নিবন্ধে কড়া সমালোচনা করে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাইলাম বলেন, এটা বিশ্ব শান্তিরক্ষা মিশনে বাহিনীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং প্রশ্ন তৈরি হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক কাঠামোর মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে ২০১১ সাল থেকে বিদেশী পর্যবেক্ষকেরা ধারণা পোষণ করে আসছিলেন। সাম্প্রতিক নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রকৃতপক্ষে তা প্রমাণসহ দেখিয়ে দিলো। বিরোধী দলগুলোর ওপর যত রকমের সন্ত্রাস চালানো যায়, তার সবগুলো প্রয়োগ করেই ৩০ ডিসেম্বরের ভোট হয়েছে। ভোট চুরির সব নোংরা কৌশল প্রয়োগ করে শেখ হাসিনার দল ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ফলাফল নিজের জন্য বাগিয়ে নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের ভোটের চিত্র তুলে ধরে মাইলাম বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীরা যেন তাদের আসনগুলোতে কোনো প্রচার-প্রচারণা না চালায়, বাইরে না যায়, সেজন্য হুমকি আর ভয় দেখানো হয়েছিল। সেনাবাহিনী নামে মাত্র মাঠে ছিলো। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। পুরো নির্বাচনে সেনাবাহিনী লুটেরাদের ভোট চুরিতে সহায়তা করেছে।
আলোচনায় ‘আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরা'
প্রধান নির্বাচন কশিনার (সিইসি) কে এম নূরল হুদা'র ‘আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার সুযোগ' সংক্রান্তবক্তব্য ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷ বিএনপি বলেছে থলের বেড়াল বেরিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি
৯ মার্চ ২০১৯/ ডয়েচে ভেলে
চট্টগ্রামে বিবিসি সংবাদদাতার ক্যামেরায় যেভাবে ধরা পঙলো ভোটের আগেই পূর্ণ ব্যালটবক্স
সময় সকাল ৭টা ৫৪ মিনিট - যেহেতু কয়েক মিনিট পরেই ভোটগ্রহণ শুরু হবে, তাই ব্যালটবক্সগুলো বিভিন্ন বুথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু অবাক হয়ে দেখি সবগুলোই ভর্তি! দোতলায় প্রিজাইডিং অফিসারের কক্ষে গিয়ে সেখানেও ব্যালটবক্স ভর্তি দেখতে পাই। হাতে মোবাইল ফোন ছিলো। আর নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু জায়গা এবং মূহুর্ত ছাঙা সংবাদ সংগ্রহের জন্য ছবি তোলা বা ভিডিও ধারণ করা যাবে না, তাই বিবিসির জন্য মোবাইল ফোনেই ছবি ও ভিডিও ধারণ করি।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮/ বিবিসি বাংলা
ইতিহাসের নিকৃষ্ট নির্বাচন হয়েছে বাংলাদেশে : মাইলাম
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা উইলসন সেন্টারের সিনিয়র স্কলার ও রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসের নিকৃষ্ট নির্বাচন হলো বাংলাদেশের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন। আসল কথা হলো ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী ‘নির্বাচনের ফলাফল চুরি করেছে’, আর যারা নিজেদের সরকার বলে দাবি করছে তারা ‘অবৈধ’।
১৬ জানুয়ারি ২০১৯/ সংবাদ২৪৭
নির্বাচনে ৯৪ ভাগ আসনেই অনিয়ম হয়েছে: টিআইবি
৫০টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতে “ভোটের আগের রাতে ব্যালট পেপারে ছাপ মারা হয়েছে” এবং ৩০টিতে “কেন্দ্র দখল করে ছাপ মারার” ঘটনা ঘটেছে। সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শতকারা ৯৪ টি আসনে অনিয়ম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
১৫ জানুয়ারি ২০১৯/ ডেইলি স্টার
সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতায়, নিহত ১৬
সারাদেশে নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত হয়েছে ১৬ জন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় এক বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে ও একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন, চট্টগ্রামের পটিয়ায় যুবলীগ কর্মী, এক ইসলামী ফ্রন্ট কর্মী ও বাঁশখালীতে জাতীয় পার্টির কর্মী, রাঙ্গামাটিতে যুবলীগ নেতা, রাজশাহীর মোহনপুরে আ.লীগ নেতা, একই জেলার তানোর উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় গুলিতে এক রাজমিস্ত্রি, টাঙ্গাইলে এক বিএনপি নেতার মরদেহ উদ্ধার, বগুড়ার কাহালুতে একজন নিহত ও দিনাজপুরে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
৩০ ডিসেম্বর ২০১৮/ সংবাদ ২৪৭
একাদশ সংসদ নির্বাচন অনিয়মের খনি : সুজন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে ‘সুজন’ বলেছে, এ নির্বাচন অনিয়মের খনি, একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এ নির্বাচনে ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। যা কোনোক্রমেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। ৭৫টি আসনে ৫৮৬ কেন্দ্রে সব ভোট নৌকায় এবং একটি কেন্দ্রে পড়েছে ধানের শীষে। ১২৮৫ কেন্দ্রে ধানের শীষে এবং দুটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে একটিও ভোট পড়েনি। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। তিনি আরও জানান, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চারটি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত তাৎক্ষণিক ফলাফলের সঙ্গে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে অমিল রয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১ দশমিক ০৯ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ পর্যন্তভোটের পার্থক্য পাওয়া গেছে।
১০ জুলাই ২০১৯/ যুগান্তর
হঠাৎ কেন এত ‘গায়েবি মামলা’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি পর্যন্তপ্রত্যেক নেতাকে মামলার আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই পুলিশ বাদী হয়ে সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক ‘গায়েবি’ মামলা করছে। ঢাকা ও জেলা পর্যায়ের পুলিশের বেশ কিছু সূত্রের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
৭ অক্টোবর ২০১৮/ প্রথম আলো
মৃত ব্যক্তিকেও ককটেল ছুড়তে দেখেছে পুলিশ!
রাজধানীর চকবাজার থানা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজুল্লাহ মারা গেছেন ২০১৬ সালের মে মাসে। মৃত্যুর প্রায় ২৮ মাস পর তাঁকে একটি মামলার আসামি করেছে পুলিশ। প্রয়াত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়েছেন তিনি। এমনকি অন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটিয়েছেন।এই মামলার আরেক আসামি বিএনপির সমর্থক আব্দুল মান্নাফ ওরফে চাঁন মিয়া গত ৪ আগস্ট হজ করতে সৌদি আরবে যান। তিনি এখনো দেশে ফেরেননি।
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ প্রথম আলো
গায়েবি মামলায় আর কত দিন আটক
এই মুহূর্তে বিএনপির সামনে নির্বাচনে পরাজয়ের চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হলো দলীয় নেতা-কর্মীদের মামলা-হামলা ও জেল-জুলুম থেকে রক্ষা করা। ২০১৩-১৪ সালে এবং ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাস বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন ঠেকানো কিংবা অবরোধ কর্মসূচির সময় যে ভয়াবহ সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে, তা মিথ্যা নয়। তবে সে সময় যারা বাসে বোমা কিংবা আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, খুব কম ক্ষেত্রে আমাদের করিতকর্মা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের পাকড়াও করতে পেরেছে। তারা ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে হুকুম পালনকারীকে না ধরে হুকুমদাতাকে নিয়ে টানাটানি করেছে। ফলে নাশকতার মামলাগুলো এখনো ঝুলে আছে। বিচার হয়নি।
৫ জানুয়ারি ২০১৯/ প্রথম আলো
এবার ‘গায়েবি ধর্ষণ’ মামলায় হয়রানি
মামলার বাদী বলছেন, ধর্ষণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তিনি ধর্ষণের শিকার হননি। তাই ডাক্তারি পরীক্ষায়ও সম্মত হননি তিনি। এই নারী আদালতে লিখিতভাবেও এ কথা জানিয়েছেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা পুলিশ বলছে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে। এই ‘গায়েবি ধর্ষণ মামলা’র আসামি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ। গ্রেফতার এড়াতে প্রায় এক মাস এলাকাছাড়া ছিলেন তিনি। সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে গত সোমবার সুনামগঞ্জের আদালতে হাজির হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৭ নভেম্বর ২০১৮/ প্রথম আলো
বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট: দায় কার?
বাংলাদেশে মঙ্গলবার দুইশো'র বেশি এলাকায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের যে নির্বাচন হয়েছে, সেখানে ভোটার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় কম কম ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে যে অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ভোটে প্রায়
একই ধরণের প্রবণতা দেখা গেছে। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মাঝে চরম আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে এবং সেজন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোটাররা কেন্দ্রমুখী হচ্ছে না।
২০ অক্টোবর ২০২০/ বিবিসি বাংলা
ভোটে জিতেই খুন হলেন বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর
নির্বাচনে ভোট গণনায় ৮৫ ভোটে বিজয়ী হন তরিকুল। ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরপরই পরাজিত শাহাদত হোসেন বুদ্দিনের (উটপাখি) সমর্থকদের সঙ্গে বিজয়ী প্রার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ছুরিকাঘাতে বিজয়ী কাউন্সিলর তরিকুল গুরুতর আহত হন। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম মৃত ঘোষণা করেন।
১৬ জানুয়ারি ২০২১/ বাংলানিউজ২৪
নির্বাচনী সংঘাতে চার মাসে ৬৬ জনের মৃত্যু
ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরাই এসব সংঘাতে বেশি জড়াচ্ছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ‘বিদ্রোহী’দের মধ্যে সংঘর্ষ বেশি হচ্ছে। এসব সংঘর্ষে দেশি অস্ত্র থেকে শুরু করে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। গত ৪ মাসে নির্বাচনী সংঘাতে সারা দেশে ৬৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
১৯ ডিসেম্বর ২০২১/ প্রথম আলো
একটি ঘটনারও তদন্ত করছে না ইসি
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চার ধাপে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতায় এ পর্যন্ত বিজয়ী কাউন্সিলরসহ অন্তত ছয়জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকশ। এসব ঘটনার একটি ঘটনাও তদন্ত করার উদ্যোগ নেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গঠন করা হয়নি কোনো কমিটি। এমনকি বেশ কয়েকটি পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতা ও ভোটকেন্দ্র দখল বা ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
সেগুলোর বিষয়েও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কমিশন। উলটো সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহের শৈলকূপা, কুষ্টিয়াসহ যেসব পৌরসভা নির্বাচনে রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় মানুষ মারা গেছে, সেসব নির্বাচনের ফলাফলের সরকারি গেজেট প্রকাশের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে ইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এমন কার্যক্রমে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনাররা একটি পোস্ট অফিসের দায়িত্ব পালন করছেন। তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ফলাফলের গেজেট প্রকাশ নিয়ে আছে। নির্বাচনে খুন-খারাবি, মারামারি বা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে কি না, এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দেখছি না। অথচ বক্তৃতা করে সম্মানি নিতে দেখছি। তিনি বলেন, এখন যেভাবে নির্বাচন হচ্ছে, সেটা কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনের সংজ্ঞায় পড়ে না।
২০ জানুয়ারি ২০২১/ যুগান্তর
সহিংসতা বাড়ছে ইউপি নির্বাচনে
এখন পর্যন্ত ইউপি ভোটে ৩০জনের প্রাণহানি ও চার শতাধিক আহত হয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। সর্বশেষ সোমবার মেহেরপুরের গাংনীতে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত মারা গেছেন। এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ১২জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
৯ নভেম্বর ২০২১/ ইত্তেফাক
৩৭ মৃত্যুর পর ভোটের সহিংসতাকে ‘ঝগড়াঝাঁটি’ বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বৃহ¯পতিবার পর্যন্ত দুই ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে৷ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না৷ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নির্বাচনী সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
১১ নভেম্বর ২০২১/ ডয়েচে ভেলে
ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। গত ৯ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় অর্ধশত মানুষ। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভুঁইফোড় নেতৃত্ব, স্থানীয় আধিপত্য আর রাজনৈতিক অন্তর্কোন্দলের কারণেই ঘটছে এসব ঘটনা।
১১ নভেম্বর ২০২১/ সময় টিভি
ভোটের খুনে বিচার নেই
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে সহিংসতায় গতকাল রোববার পর্যন্ত ৪৩ জন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় দায়ের ৩৪টি মামলায় আসামি কয়েক হাজার। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে খুনের মামলার আসামি ধরা পড়ছে না। গতকাল পর্যন্ত ১৩৫ জন গ্রেপ্তার হলেও নরসিংদীতে ৯ খুনের ছয়টি মামলায় একজন আসামিও ধরা পড়েনি। কুমিল্লার মেঘনার বাওড়খোলা ইউনিয়নে সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনায় মামলাই হয়নি! হতাহত ও হামলাকারী- উভয় পক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থক। অতীতে ভোটের সহিংসতায় খুনের বিচারের নজির বিরল। ভোটের রাজনীতি থাকায় এবারের হত্যাকাণ্ডগুলোরও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হবে- এ সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
২২ নভেম্বর ২০২১/ সমকাল
ইউপি নির্বাচনে এত আদম সন্তান নিহত হলো কেন?
২০১৬ সালের ভয়াল ও তিক্ত অভিজ্ঞতার পরেও ২০২১ সালে দলীয় ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করা হলো কেন? আর পার্টি টিকেটে নমিনেশন দেওয়া এবং নির্বাচন করার ফলে যে বিষময় পরিণতি হওয়ার কথা তাই হয়েছে। ১২ নভেম্বর দৈনিক ‘ইনকিলাবের’ প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান সংবাদ মোতাবেক চলতি বছরের শুরু থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত প্রাক নির্বাচন, নির্বাচন এবং নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় ৯২ জন আদম সন্তান মারা গেছে এবং ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ জখম হয়েছে। ৪৬৯টি সহিংসতার ঘটনায় এরা হতাহত হয়েছে। ইউপি ইলেকশন হবে ৫ ধাপে। তার মধ্যে দুইটি ধাপের ইলেকশন হয়ে গেল। আর এই দুই ধাপেই ৯২ জন নিহত হয়েছে। আরও তিনটি ধাপ রয়ে গেল। সেই তিনটি ধাপের ইলেকশনে আরো কতজন মারা যায় এবং কত জন আহত হয় সেটি আল্লাহ
মালুম।
এমনটি তো হওয়ার কথা ছিল না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তো বিএনপিসহ প্রধান বিরোধী দলসমূহ অংশ নিয়েছিল। তাই তর্কের খাতিরে বলা যায় যে, ৫ বছর আগে সরকার এবং বিরোধীদের সংঘর্ষে ঐ প্রাণহানি ঘটেছে। ‘ডেমোর্ক্যাসি ওয়াচ’ নামক একটি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থার বরাত দিয়ে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে বলা হয়েছে যে, নির্বাচন পূর্ব ও নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে ২০১৬ সালে ৮৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে শুধু নির্বাচনের দিনই নিহত হয়েছে ৫৩ ব্যক্তি। এই বিপুল সংখ্যক ব্যক্তির মৃত্যু এবং সহস্রাধিক ব্যক্তির আহত হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৫ বছর আগেও যেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তেমনি ৫ বছর পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এবার হচ্ছে একদলীয় নির্বাচন। এবার তো আর বিএনপি-জামায়াত ইলেকশনে অংশ নেয়নি। তারা বয়কট করেছে। জাতীয় পার্টি অংশ নিয়েছে। কিন্তু তাদের দেশের সিংহভাগ মানুষ বিরোধী দল বলতে নারাজ। তারা জাতীয় পার্টিকে বলে, ‘হার ম্যাজেস্টিজ লয়াল অপোজিশন’, অর্থাৎ মহামান্যার অনুগত বিরোধী দল। সেই জন্যই বলছিলাম যে, এটি তো ছিল একতরফা নির্বাচন। যিনি আওয়ামী লীগের নমিনেশন পেয়েছেন তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ক্যান্ডিডেট। যিনি নমিনেশন পাননি তিনি অভিহিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে। বিদ্রোহী প্রার্থী যারা জয়লাভ করেছেন তারা কিন্তু আওয়ামী লীগেই থেকে যাচ্ছেন। তাহলে ইলেকশন হয়েছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। আর এমন একটি সমীকরণে ৯২ জন আদম সন্তানের হত্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গৃহীত হবে, তেমন প্রত্যাশা করা খুব বেশি আশা করা হবে বলেই মনে হয়।তাহলে চেয়ারম্যান এবং মেম্বার পদের জন্য নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের ভাষায় এমন রক্তাক্ত নির্বাচন হলো কেন?
২৩ নভেম্বর ২০২১/ ইনকিলাব
নির্বাচনী সংঘাতে চার মাসে ৬৬ জনের মৃত্যু
ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরাই এসব সংঘাতে বেশি জড়াচ্ছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ‘বিদ্রোহী’দের মধ্যে সংঘর্ষ বেশি হচ্ছে। এসব সংঘর্ষে দেশি অস্ত্র থেকে শুরু করে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। গত ৪ মাসে নির্বাচনী সংঘাতে সারা দেশে ৬৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
১৯ ডিসেম্বর ২০২১/ প্রথম আলো
নির্বাচনে সহিংসতা, বিজিবি সদস্যসহ নিহত ৯
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার ভোটের দিন সহিংসতায় বিজিবি সদস্যসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। এতে বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। সংঘর্ষের ঘটে অন্তত ১৩০টি কেন্দ্রে। গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ, জাল ভোট, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের ঘটনাও ঘটেছে।
২৯ নভেম্বর ২০২১/ নিউজ২৪টিভি
তিন ধাপের ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় মৃত্যু ৮০, বাকি আরও দুই ধাপ
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে সহিংসতার ঘটনা। গত এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৮০ জনের। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবের সঙ্গে নভেম্বর অনুষ্ঠিত দুটি ইউপি নির্বাচনে মৃত্যুর তথ্য যুক্ত করে এই সংখ্যা পাওয়া গেছে।
২৯ নভেম্বর ২০২১/ সঠিক সংবাদ
ইউপি নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা বেড়েই চলেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সহিংসতা, জালভোট, কেন্দ্র দখলসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে তৃতীয় ধাপে ৯৮৬ ইউনিয়ন পরিষদ এবং নয়টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয়েছে রোববার। ভোট চলাকালে নীলফামারী, লক্ষ্মীপুর, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষে বিজিবি সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতাসহ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। কেবল ঠাকুরগাঁওয়েই নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত হয়েছেন তিনজন। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে কোনো কোনো জায়গায় সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের ব্যবহার জনমনে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
৩০ নভেম্বর ২০২১/ যুগান্তর
বিনা ভোটে পাশ আর সহিংসতার ইউপি নির্বাচন
চারধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে মোট এক হাজার ৩৫৯ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন৷ যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের বলতে গেলে সবাই সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী। চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে সহিংসতা ছাড়াও প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে মারাধর, ভোটকেন্দ্র দখল, ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। চার ধাপে নির্বাচনি সহিংসতায় ৯৭জন নিহত হয়েছেন।
২৬ ডিসেম্বর ২০২১/ ডয়েচে ভেলে
জনসভায় ১০ খুনের নির্দেশ চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলের!
কুমিল্লার চান্দিনার জোয়াগ ইউনিয়ন পরিষদ, ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আউয়াল খাঁনের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, দলের মনোনয়ন নিয়া আসায় আমি নির্দেশ দিচ্ছি, মার খাওয়া যাবে না। ১০টা খুন করা লাগে করবেন, বাকিটা আমি দেখবো, ইনশাআল্লাহ। আউয়াল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দলটির উপজেলা শাখার কৃষি ও সমবায় স¤পাদক।
৩১ ডিসেম্বর ২০২১/ বাংলা.২৪
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন