বাংলাদেশে যে কয়টি রাজনৈতিক দল আছে প্রত্যেক দলেরই মৌলিক কিছু এজেন্ডা বা ইস্যু আছে। নিজ দলের আদর্শের দিকে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কিংবা জনমত গঠনের লক্ষ্যে অথবা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বিভিন্ন সময়ে ইস্যুগুলোর ব্যবহার করে থাকে। রাজনীতির মাঠে এগুলোকে তারা ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্তআওয়ামী লীগকে দুটি এজেন্ডা নিয়েই মাঠ গরম করতে দেখা যাচ্ছে। তারা সরকারে থাকলে বিরোধী দলকে আর বিরোধী দলে থাকলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে দুটি বিষয়ের বেশি প্রচারণা চালিয়ে থাকে। একটি হলো স্বাধীনতাবিরোধী বা যুদ্ধাপরাধের ইস্যু আর দ্বিতীয়টি হলো সংখ্যালঘু নির্যাতন।
দলটি অতিমাত্রায় ভারতঘেঁষা হওয়ার কারণে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনও তাদের একটু বেশি ভালবাসে। আর এ সুযোগটাকেই আওয়ামী লীগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তারা নিজেরাই সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ও আগুন দিয়ে মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জা পুড়িয়ে দিয়ে পরে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালায়। বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা-ভাংচুর ও আগুন দেয়ার যে ঘটনা ঘটেছে তদন্তের পর দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের লোকেরাই জড়িত ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে গিয়ে তাদের জন্য হিতে-বিপরীত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের কাছেও বিষয়গুলো এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের এমন অসংখ্যা ঘটনা আছে, যা বিগত কয়েক বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগের লোকেরা ঘটিয়েছে। আমার পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য আমি শুধু এখানে আওয়ামী লীগের সংখ্যালঘু নির্যাতনের কয়েকটি দৃষ্টান্তউল্লেখ করবো।
মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর রিপোর্টনুসারে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে সংখ্যালঘুদের উপর মোট হামলার ঘটনা ঘটেছে, ১৩৭৩ টি। এসব হামলার ঘটনায় আহত হয়েছে ৫০৪ জন, বাড়ি-ঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪২০ টি, ভূমি দখলের ঘটনা ঘটেছে ১০ টি, অপহরণের স্বীকার হয়েছে ১৩৫ জন এবং ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে ১০৪ জন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র আসক এর মতে সংখ্যালঘুদের হামলার সময়গুলোর মধ্যে ২০১৬ টি ছিল সবচেয়ে উদ্বেগজনক। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মালম্বীদের ১৯২ টি বাসস্থান, ২ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ১৯৭ টি প্রতিমা, পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ৫টি জমি ও বসতবাড়ি দখলের ঘটনা ঘটেছে।
বিগত ১৩ বছরে সংখ্যালঘুদের উপর এহেন বেশ কয়েকটি বড় ধরণের হামলার ঘটনা ঘটেছে। যা শুধু দেশেই নয় বহিঃবিশ্বেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছি। উক্ত ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ২০১২ সালে কক্সবাজারে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে, রামুতে ১২ টি বৌদ্ধ বিহার, ৩০ টি বসতঘর এবং উঁখিয়া ও টেকনাফের ৭টি বৌদ্ধ বিহার ও ১১টি বসতঘরে হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে।
রামুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাদি হয়ে ৩৭৫ জন নামসহ মোট ১৫ হাজার ১৮২ জনকে অভিযুক্ত করে ১৯ টি মামলা দায়ের করে। সাময়িকভাবে পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে পুলিশের ভূমিকাও নিক্রিয় হয়ে যায় বলে অভিযোগ করে, স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা। এছাড়াও তারা দাবি করেন, পুলিশ ইচ্ছে করেই মূল হোতাদের আড়াল করছে। রামুর হামলার ঘটনায় সরকার দলীয় নেতা কর্মীরা জড়িত রয়েছে বলেই, পুলিশ নীরব রয়েছে বলে দাবি করে স্থানীয় বৌদ্ধ নেতারা।
২০১৩ সালের পাবনার সাঁথিয়ায় বনগ্রাম বাজারে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় শতাধিক বসতবাড়িতে হামলা এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। উক্ত হামলার ঘটনায় তৎকালীণ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ভাই এবং স্থানীয় আওয়ালীগ নেতা তসলিম উদ্দিন খানসহ স্থানীয় যুবলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান খাজা ও যুবলীগ কর্মি দুলালকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় হিন্দুরা দাবি করেন, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। কারণ, আসামীরা প্রায় সকলেই আওয়ামীলীগ সরকারের তৎকালীণ প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এবং সরকার দলীয় কর্মী। এছাড়াও পাবনার সাঁথিয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম এলাকায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের গ্রামে হামলা, বাড়িঘর- দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন দেওয়ার ঘটনার মূল হোতাদের আড়াল করা হচ্ছে। পুলিশ জানে, এখানে কী হয়েছে, কারা করেছে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে তাদের এখনো ধরা হয়নি। আড়াল করা হচ্ছে।
এছাড়াও পাবনার সাঁথিয়ার ঘটনায় বাম রাজনৈতিক দল সিপিবি এবং বাসদ যৌথভাবে একটি অনুসন্ধান চালায় এবং সেই অনুসন্ধানে দেখা যায়, হামলার সাথে আওয়ামীলীগ সরকারের নেতা-কর্মীরা জড়িত।
২০১৬ সালের ২৯ শে অক্টোবর ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালানো হয়। উক্ত ঘটনায় প্রায় অর্ধশত বসত বাড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। উল্লেখ্য, দলীয় বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সমর্থকরা এ হামলার নেপথ্যে ছিলো।
নাসিরনগরের এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের সঙ্গে মোকতাদির ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের দ্বন্দ্বই এ হামলার কারণ হিসেবে অনুসন্ধান রিপোর্টে উঠে এসেছে। উক্ত অনুসন্ধানে নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আতিকুর রহমান আঁখিকে হামলার মূল হোতা হিসেবে চিন্হিত করা হয়।
২০১৭ সালের নভেম্বরে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালানো হয়। উক্ত ঘটনায় প্রায় ২০ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
২০১৬ সালের নভেম্বরে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্বেই নিন্দার ঝড় ওঠে। গাইবান্ধার ঐ এলাকার আওয়ামীলীগের সাংসদ আবুল কালাম আজাদ ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আলম বুলবুলের নেতৃত্বে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাঁওতালদের ওপর হামলা চালানো হয়েছিলো বলে দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীর। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এই বুলবুলই একসময় ভূমি উদ্ধার কমিটির সভাপতি ছিলেন।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, উপরে উল্লেখিত ঘটনাগুলোর একটি ঘটনারও বিচার প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়নি। কোনো এক অজানা কারণে, পুলিশ বাহিনী তাদের তথ্যনুসন্ধান এখনো সমাপ্ত করে বিজ্ঞ আদালতে জমা দিচ্ছে না। যার দরুণ বিচার প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছে।
এলাকাবাসীর তথ্যানুসারে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামীলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান বুলবুলের ভাষ্য পাল্টাতে থাকে। তিনি হয়ে ওঠেন এলাকার ত্রাস। বুলবুল বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের এমপি’র ডান হাত হিসেবে পরিচিত। যার নিয়ন্ত্রনে এম, পি’র ব্যক্তিগত অস্ত্র ভান্ডার রয়েছে। সাহেবগঞ্জ সাঁওতাল পল্লীতে চালানোর আগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে পল্লীর সবকটি বাড়িতে লুটপাট ও কাউকে ছাড় না দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলো এই বুলবুল। উল্লেখ্য, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান বুলবুলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একদল সন্ত্রাসী আদিবাসি পল্লীতে হামলা চালায়।
এ ঘটনায় বর্তমান সাংসদ এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সম্পৃক্ত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ থাকা স্বত্ত্বেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
সংখ্যালঘুদের উপর হামলা কেন?
সংখ্যালঘুদের উপর চালানো হামলা ও নির্যাতনের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মূলত দুটি কারণে এই হামলা গুলো চালানো হয়।
প্রথমত সংখ্যালঘুদের বসতবাড়ি ও সম্পত্তি দখল করা। সরকার দলীয় এমপি ও মন্ত্রীরা নিজেদের প্রশাসনিক প্রভাব ও রাজনৈতিক জনশক্তিদের ব্যবহার করে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালিয়ে তাদের ওপর অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা জনিত ভীতি তৈরী করে। যাতে করে তারা বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য হয়। আর সংখ্যালঘুদের জন্য বিকল্প চিন্তার অর্থ দেশ ত্যাগ করে প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতে চলে যাওয়া।
সংখ্যালঘুরা যখন দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়, তখন স্বাভাবিক কারণেই তারা নিজেদের সমস্ত সম্পত্তির এটা সুরাহা করতে চায়। মানে, সহায়-সম্পত্তি এবং বসতবাড়ি বিক্রি করে তবেই দেশত্যাগ করতে চায়। ঠিক তখনই তাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূত্রে সেই সম্পত্তিগুলো ক্রয় করে, সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতারা।
দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা করার জন্য। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংখ্যালঘু বিষয়টি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। যার কারণে, তাদের ওপর ভর করে প্রায়শই রাজনৈতিক দলগুলো সুবিধা আদায় করতে চায়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুবিধা আদায় করে সরকার পক্ষ। সংখ্যালঘু হামলার ঘটনাকে পুঁজি করে মিডিয়া এবং প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সরকার বিরোধী পক্ষকে সবসময়ই দারুণ চাপে রাখতে পারে। যা গত দশ বছরে আওয়ামীলীগের শাসন আমলে খুব ভালোভাবেই প্রত্যক্ষ করা গেছে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছে আওয়ামীলীগ। আবার এই আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেই উল্লেখ্যযোগ্য হারে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর রিপোর্টে উঠে এসেছে।
সংখ্যালঘু নিয়ে আওয়ামী সরকার বরাবরই রাজনীতি করে আসছে। তারা নিজেদেরকে সংখ্যালঘুদের বন্ধু বলে দাবী করে কিন্তু তাদের আমলেই এবং তাদের নেতাকর্মী দ্বারাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতিত হয়। হিন্দুদের উচ্ছেদ ও হিন্দু বাড়ি দখলে আওয়ামী নেতাদের জুড়ি মেলা ভার। নিচে আমরা তার কিছু খন্ডচিত্র দেখবো
১. ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী বেগম হাসিনা মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক পরিবারকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নগরীর কে সি দে রোড এলাকার বাসিন্দা ঝিনু রাণী বড়ুয়া।
সমকাল, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
২. মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর টাংগাইলে সিদ্দিকী ও খান পরিবার সংখ্যাঘুদের প্রায় পৌনে ৭০০ কোটি টাকার জমি দখল করে নেয়। লাগামহীন ভাবে জমি দখলের কারণে টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষের কাছে এই দুই পরিবার ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিতি পায়।
যুগান্তর, ২৯ অক্টোবর ২০১৪
৩. ২৮ নভেম্বর ২০১৫, মৌলভীবাজারের জুঙী উপজেলা জায়ফরনগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেমানের বিরুদ্ধে দেবালয় মন্দিরের জমি দখল ও স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে জুঙী থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়।
প্রথম আলো, ২৯ নভেম্বর ২০১৫
৪. ৩০ জানুয়ারি ২০১৬, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাখারিকাঠী গ্রামের ২০টি হিন্দু পরিবারকে তাদের পৈতৃক ভিটেমাটি ছেঙে ভারত চলে যেতে বলেছেন নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাজিরপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন খানের আত্মীয়রা। ইতিমধ্যে ওই সব হিন্দু পরিবারের বাড়ি ঘরের পাশের ফাঁকাস্থানে কয়েকটি ঘর তুলে প্রায় ৭ একর জমি দখল করেছেন তারা।
সংবাদ, ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ / সংগ্রাম ও শীর্ষ নিউজ, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
৫. ২৫ মার্চ ২০১৬, বাগেরহাট মোরেলগঞ্জে ইউপি নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে চারটি সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা, লুট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় আ.লীগের লোকজন। এই ঘটনায় আ.লীগের ৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
শীর্ষ নিউজ, ২৫ মার্চ ২০১৬।
৬. ৫ মার্চ ২০১৬, না জানিয়ে জমি বিক্রির অপরাধে এক সংখ্যালঘুর দোকানে তালা দিয়েছে যুবলীগের নামধারী সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরে। না জানিয়ে জমি বিক্রির অপরাধে ওই নিরীহ পরিবারের দোকান ঘরে তালা দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে সন্ত্রাসীরা।
এইবেলা, ০১ এপ্রিল ২০১৬
৭. ১৮ মার্চ ২০১৬, সদর উপজেলার জালালাবাদ জলদাস পাঙায় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে রাতের আঁধারে এক হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা ও তাদের বসতভিটা দখল করা হয়েছে। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৪ জন। এ ছাঙা স্বর্ণালংকার ও টাকা লুটেরও অভিযোগ উঠেছে।
এইবেলা, ০১ এপ্রিল ২০১৬
৮. ২৭ মার্চ ২০০৯, ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ বাজারে যুবলীগ ক্যাডার সুমনের নেতৃত্বে বেলাল হোসেন অপেল, মহিউদ্দিন নূরন নবী, অনিক বিশ্বাস, দেলু, মো. ইসমাইল, নিজাম উদ্দিন, মো. আজাদ ও আব্দুর রহিম সশস্ত্র হামলা করে সংখ্যালঘু হীরা বণিকের ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে।
অধিকার রিপোর্ট, ২০০৯
৯. ২৪ নভেম্বর ২০১৩, জমি-জমা সংক্রান্তবিরোধের জের ধরে বরিশালের পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের রতন ভৌমিকের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ওই বাড়িতে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা। প্রতিমা ভাঙচুর ও ২ নারীকে আহত করে বাড়িতে তিনটি সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়।
কালের কণ্ঠ, ২৫ নভেম্বর ২০১৩
১০. ১৫ জানুয়ারি ২০১৭, খুলনায় চিত্ত রঞ্জন বাইন (৪৫) নামে এক হিন্দু কলেজ শিক্ষককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দুবৃত্তরা দুপুর ২টায় মহানগরীর শের এ বাংলা রোডের ৫৯ নং বাড়ির নিচ তলার ভাঙা বাসা থেকে পুলিশ তার হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে।
এইবেলা, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭
১১. ২০ জানুয়ারি ২০১৭, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বঙগাঁও বাজার রাতে মন্দিরের ভেতর ঢুকে দুর্গাসহ ছয়টি মূর্তি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুবৃত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
নয়া দিগন্ত, ২২ জানুয়ারি ২০১৭।
১২. ১৩ মে ২০১৭, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন গ্রামের কালী মন্দির শ্মশান ঘাটের ৯টি প্রতিমা ভাঙচুর, করেছে দুবৃত্তরা।
সুনামগঞ্জের খবর ডটকম, মে ১৪ ২০১৭
১৩. ১৭ জুন ২০১৭, গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় কালী ও শিবের মূর্তি ভাঙচুর, করে দুবৃত্তরা। মন্দির কমিটির সভাপতি রঞ্জন কুমার বিশ্বাস জানান, শনিবার রাতে পূজা ও প্রার্থনা শেষে ওই মন্দিরের পূজারীরা দরজা বন্ধ করে চলে যায়। পরের দিন সকালে কয়েকজন পূজারি মন্দিরে গিয়ে দেখেন দরজা খোলা। এরপর তারা ভেতরে গিয়ে দেখেন কালী ও শিবের মাথা এবং হাত ভাঙা।
মানবকণ্ঠ, ১৯ জুন ২০১৭
১৪. ০৮ জুলাই ২০১৭, নরসিংদী শহরের মধ্যকান্দা পাঙায় দিনের বেলায় ঘরে ঢুকে এক সংখ্যালঘু গৃহবধূ দিপ্তি রানী ভৌমিক (৪৫) কে গলা কেটে হত্যা করে দুবৃত্তরা। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মধ্যকান্দা পাঙা দেশপ্রিয় রােডের হরিপদ সাহার বাড়ির ৫ম তলার ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বামীর নাম প্রদীপ কুমার ভৌমিক।
যুগান্তর, ০৯ জুলাই ২০১৭
১৫. ১৯ আগস্ট ২০১৭, মৌলভী বাজারের কমলগঞ্জে দীপক মল্লিকের (৪৫) সাথে জিতেন মল্লিকের জমি সংক্রান্তবিরোধের জের ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আসিদ আলীর ছেলে শাহ আলমের নের্তৃত্বে ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা ও ভাঙচুর, করে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে মহিলারা বাঙী ছেঙে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।
জনকন্ঠ, ২০ আগস্ট ২০১৭
১৬. ৩০ অক্টোবর ২০১৭, মানিকগঞ্জের শিবালয়ে শীলপাঙা সার্বজনীন মন্দির ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে জডড়ত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৫ জনকে আটক করে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ্য আব্দুর রহিম খান, শিবালয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাল হোসেনসহ ৮ জন এবং অজ্ঞাত আরো ৫০ থেকে ৬০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ভাঙ্গা মন্দিরের টিন, খুটি বোঝাই একটি পিকআপ ভ্যানও জব্দ করেছে। মন্দিরের সভাপতি সূর্য শীল আরটিভি অনলাইনকে জানান, আওয়ামী লীগ নেতা রহিম খান দীর্ঘদিন ধরে ওই মন্দিরের জায়গা দখলের চেষ্টা করে আসছিলেন।
আর টিভি অনলাইন, ৩০ অক্টোবর ২০১৭
১৭. ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ৫টি প্রতিমা ভাঙচুর করে। এসময় ছাত্রলীগের হামলায় মন্দির কমিটির সভাপতিসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হয়। আহতরা হলেন, মন্দির কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল ঘোষ, পলাশ ঘোষ, বাবু লাল ঘোষ, কালিপদ ঘোষ, সুমন ঘোষ ও সুকুমার ঘোষ। মন্দিরের ভাঙচুরকৃত মূর্তিগুলোর মধ্যে বিষ্ণু, ব্রম্মা দূর্গা, কার্তিকসহ ৫টি মূর্তি রয়েছে।
এনালাইসিসবিডি,৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
১৮. ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ২০/২২ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সদস্য ও বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক শাহনামার কুয়াকাটা প্রতিনিধি অনন্তমুখার্জীর মালিকানাধীন অন্যান্য মেডিসিন হাউস সহ ৭৮টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। হামলায় অনন্তমূখার্জী, ভ্যান চালক হানিফ গাজী এবং পথচারীসহ কয়েক দোকানি গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিক অনন্তমূখার্জী বাদি হয়ে জেলা আ'লীগ সহসভাপতি মহিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ সহ আরো ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করে ২৬ সেপ্টেম্বর মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
দি নিউজ, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
১৯. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হয় না
বাংলাদেশে যেকোনো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও রাজনীতি হয়, কিন্তু বিচার হয় না৷ ফলে থামছে না নির্যাতনের ঘটনাও৷ অভিযোগ, নেপথ্যে ক্ষমতাসীনরা জড়িত থাকায় তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যায় না৷ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে৷ সবশেষ গ্রেপ্তার হয়েছেন মূল আসামি' শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বার৷
এদিকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে এখন তৎপর হলেও ঘটনার ১২ ঘণ্টা আগে খবর পেয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ৷ এই ঘটনার একদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ঝুমন দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ অন্যদিকে আটক স্বাধীন মেম্বার হামলার পর শাল্লা থানার ওসির সাথেই ছিলেন বলে গ্রেপ্তারের আগে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন৷
২০ মার্চ ২০২১/ ডয়চে ভেলে
২০. শাল্লায় হামলা: ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার
বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুদের গ্রামে হামলায় ‘মূল আসামি' শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
২০ মার্চ ২০২১/ ডয়চে ভেলে
সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাকান্ড
১. ৫ জানুয়ারি ২০১৪, যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা মালোপাঙা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী রণজিত কুমার রায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা হুইপ আবদুল ওহাবের ক্যাডাররদের দায়ী করেন।
মানবকণ্ঠ/মানবজমিন, ৮ জানুয়ারি ২০১৪।
২. ১১ মার্চ ২০১৬ বরগুনা সদরের গৌরীচন্না ইউনিয়নের উত্তর মনসাতলী গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাতটি পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা, মারধর ও পরিবারের নারী সদস্যদের লাঞ্ছিত করে। হামলাকারীরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন চন্দ্র বিশ্বাসের সমর্থক বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রথম আলো, ১২ মার্চ ২০১৬
৩. ৫ মার্চ ২০১৬, ভালোয় এক সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ক্যাডাররা। এই হামলায় সংখ্যালঘু পরিবারটির তিন জন সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে।
এইবেলা, ০১ এপ্রিল ২০১৬
৪. ১৫ মার্চ ২০১৬, সদর উপজেলার মনসাতলী গ্রামে সাতটি হিন্দু পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা করে মারধর ও নারীদের লাঞ্ছিত করেছে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা।
এইবেলা, ০১ এপ্রিল ২০১৬
৫. ২৭ মার্চ ২০১৬, সদর উপজেলার চওঙা বঙগাছা ইউনিয়নে শনিবার রাত সাঙে ১১টায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মোশাররফ হোসেনের কর্মীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জুলফিকার আলী ভুট্ট সমর্থিত কর্মী ও মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি বুদারু বর্মনের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা বুদারু বর্মনের বাঙীতে অগ্নিসংযোগ ও চৌরঙ্গী বাজারে অবস্থিত নির্বাচনী প্রচারণা অফিসও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এইবেলা, ০১ এপ্রিল ২০১৬
৬. ০১ নভেম্বর ২০১৭, নওগাঁ জেলার পতœীতলা থানার পুলিশ বনবিভাগের বাগান থেকে রণজিত কুমার রায় (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের পর্যাপ্ত আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় খুনিরা।
জনকণ্ঠ, ০১ নভেম্বর ২০১৭
৭. ০৩ নভেম্বর ২০১৭, নওগাঁর নিয়ামতপুরে মালতি বর্মন (৪২) নামে এক সংখ্যালঘু গৃহবধূকে ধর্ষণের পর গলায় শাডড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম খান ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন।
জনকণ্ঠ, ০৩ নভেম্বর ২০১৭
৮. ২৮ অক্টোবর ২০১৫, রাতে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামের জেলেপাঙায় হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে এবং দোকানে আওয়ামী ক্যাডারদের হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও গৃহবধূ তুলসী রাণী দাসের পেটের উপর উপুর্যপুরি লাথির চোটে তার ৭ মাসে গর্ভপাত ঘটে মৃত সন্তান প্রসব করে।
সংগ্রাম, ৩১ অক্টোবর ২০১৫
৯. ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী পুরুষদের খুন, ধর্ষণ, নারী অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণসহ ২৬২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এবং এসব ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ১৫৬ টি।
মানবজমিন, ৬ মার্চ ২০১৬
পরিকল্পিতভাবে প্রতিমা ও ধর্মীয় প্রতীক ভাঙচুর
১. ১৮ জানুয়ারি ২০১৪, নোয়াখালীর কৃষ্ণপুরে হিন্দুদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় স্থানীয় পূজা কমিটি আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
আমার দেশ, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
২. ১৭ এপ্রিল ২০১৫, চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস মালিপাঙা এলাকায় মুখোশ পরে রাতের আঁধারে মন্দিরে হামলা করতে গিয়ে জনতার গণধোলাই খেয়ে প্রাণ হারায় এক ছাত্রলীগ কর্মী। পরে মুখোশ খুলে নিহত সাদ্দামের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
আমার দেশ, ১৮ এপ্রিল ২০১৫
৩. ১৪ নভেম্বর ২০১৫, ঢাকার সাভার পৌর এলাকার উত্তরপাঙা কালীমন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের রাব্বী ও তার সহযোগীরা।
মানবজমিন, ১৫ নভেম্বর ২০১৫
৪. ২৩ মার্চ ২০১৬, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে ছাত্রলীগ ভাঙচুর করে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।
আরটিএনএন, ২৩ মার্চ ২০১৬
৫. সিরাজদিখানে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে মন্দিরের ছয়টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের দানিয়াপাড়া শ্মশানঘাট কালীমন্দিরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মন্দিরে থাকা একটি করে কালী ও শিব এবং দুটি করে যোগিনী ও জয়া-বিজয়া প্রতিমার মাথা ভেঙে মন্দিরের বাইরে ফেলে রাখা হয়। এর মধ্যে তিনটি প্রতিমার মাথার অংশ পাওয়া গেলেও বাকিগুলোর পাওয়া যায়নি।
১৪ মার্চ ২০২১/ প্রথম আলো
৬. নওগাঁয় ৬ মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর
নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলায় গত সোমবার রাতে ৬টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উপজেলার ভবানীপুর ও সোরিয়ালা গ্রামে একযোগে মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে যখন গ্রামবাসীরা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল।
২ নভেম্বর ২০২১/ দ্য ডেইলি স্টার
৭. খুলনায় দুর্বৃত্তের হামলা, ৪ মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর
খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামে চারটি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কিছু দোকান ও কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে শতাধিক দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় চারটি মন্দির, ছয়টি দোকান ও একটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুরো গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে; পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
০৭ আগস্ট ২০২১/ সমকাল
৮. গাজীপুরে ৩ মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, আটক ২০
গাজীপুরে তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের পর ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) মো. জাকির হাসান জানান, শহরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় বৃহ¯পতিবার সকালে তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে একটি মন্দিরের সবগুলো প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়েছে। অন্য দুটি মন্দিরের আংশিক প্রতিমা ভাঙচুর করেছে।
১৪ অক্টোবর ২০২১/ বিডিনিউজ২৪
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন