আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও দখল। দেশবাসী তা নীরবেই মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। ছাত্রলীগের একটি কেন্দ্র থেকে শুরু করে একটি ইউনিট পর্যন্তও বাকী নেই যেখানে তারা এমনসব কাজ করে না। মূলত বলতে গেলে এটাই ছাত্রলীগ কর্মীদের যোগ্যতা। পত্র-পত্রিকায় এসব কর্মকান্ডের শুধু সেই ঘটনাই আসে যেসব ঘটনাই দুপক্ষের মারামারি বা খুনোখুনি হয়েছে।
গত ১৩ বছরে অর্থাৎ ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ছাত্রলীগ পরিণত হয় এক টেন্ডার, চাঁদাবাজ ও জবর দখলকারী একটি সংগঠন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সিনোপসিসে দেখা যায়, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পরিবর্তে টেন্ডার, চাঁদাবাজি ও জবর দখলই হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের মূলমন্ত্র। বিগত ছয় বছরে ছাত্রলীগের অন্তকোন্দলে খুন হওয়া ১৪৫ জনের মধ্যে বেশির ভাগই অর্থের কারণে। এর পেছনের কারণ চাঁদাবাজি না হয় টেন্ডারবাজি। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দও সীমাহীন দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগ খুন, টেন্ডার, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের রক্ষাকবচ হিসেবে “জয় বাংলা” স্লোগানকে ব্যবহার করে আসছে।
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা আর টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠন ছাত্রলীগের আয়ের প্রধান উৎস। অভিযোগ আকারে বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে এলেও এবার ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতৃত্ব সেটাই প্রমাণ করলেন। এসব অভিযোগে এবার তাঁদের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
৮ সেপ্টেম্বর রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। এরপর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী দুদিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও ফিরে আসেন।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার গোলাম রাব্বানী ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখেন। চিঠিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ও গুলিস্তানের কার্যালয়ের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। ২০ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে দেরি করে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। রাব্বানী দাবি করেন, তাঁরা বারবার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, কমিটি বাণিজ্য আর মাদক ছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ হওয়ার বড় কারণ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের টাকা চাওয়ার যে অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে, তাতেও ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগাতে অর্থ লেনদেনের বিষয় এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের অফিস কক্ষে মাদক পাওয়ার বিষয়টি।
গত ১৩ মে সম্মেলনের এক বছরের মাথায় ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন ছাত্রলীগ সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক। এরপর থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ না পাওয়া নেতারা আন্দোলন শুরু করেন। অভিযোগ ওঠে, অর্থের বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিবির ও ছাত্রদলের নেতাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান সেই আন্দোলনের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্কে জড়ালেন দুই শীর্ষ নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজে টাকা দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে, তাদের কাছ থেকে বরাদ্দের ৪ থেকে ৬ শতাংশ নিয়ে ছাত্রলীগকে দেওয়ার দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক—এমন অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তিনি এ অভিযোগ জানিয়েও এসেছেন। তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর দাবি, কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে উপাচার্যের ছেলে ও স্বামীর এই লেনদেন হয়েছে।
উপাচার্য ফারজানা ইসলাম গতকাল প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে ইতিমধ্যে জানিয়েছি যে তারা আমাকে হুমকি–ধমকি দিয়েছে। এই হুমকিরই একটি প্রকাশ হিসেবে এখন আমার স্বামী ও ছেলের ওপর দোষ দিতে চাচ্ছে। তারা মনে করেছে, এতে আমি ভয় পাব। কিন্তু এটা একেবারে ডাহা মিথ্যা কথা। টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমার ও আমার পরিবারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
গত মে মাসে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপে ছয়টি আবাসিক হল নির্মাণের জন্য ৪৫০ কোটি টাকার দরপত্রের শিডিউল বিক্রির সময় উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ছিলেন। সে সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালে আমি জীবন–মরণ লড়াই করছিলাম। সেখানেও তারা এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিল। তারা হাসপাতালেও গেল, বাসায়ও এল। কিন্তু তাদের প্রস্তাব আমি কখনোই শুনব না। তাদের কথা না মানায় তারা অসন্তুষ্ট হয়ে ফিরে গিয়েছিল।’
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গতকাল বিকেলে শাখা ছাত্রলীগের উপ–দপ্তর সম্পাদক এম মাইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোলাম রাব্বানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সম্পর্কে যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা সম্পূর্ণ অসত্য। গত ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আলোচনার বিষয়ে তাঁরা অবগত ছিলেন না।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে বাণিজ্য
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান,বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জেলা সমমর্যাদার দুটি কমিটি ঘোষণা করেছে। এর একটি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি। গত ১৩ জুলাই ঘোষণার পর থেকেই কমিটি দিতে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির কথোপকথনের ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে তার সত্যতাও পাওয়া যায়। প্রায় পাঁচ মিনিটের ফাঁস হওয়া অডিওতে নেতা হওয়ার জন্য টাকার দেনদরবার, কমিটি ভাঙা ও নতুন কমিটি আনাসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
তবে অডিওর বিষয়টি অস্বীকার করে রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, ‘ওই কণ্ঠ আমার নয়। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।’
ছাত্রলীগের একটি সূত্র বলছে, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে শীর্ষ দুটি পদের একটি দিতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা না করে অর্থের বিনিময়ে বর্তমান নেতৃত্বকে নিয়ে আসেন।
দেশের প্রায় সব বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও শহরে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ। চাঁদা না দেয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান ও দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়। রাজধানীর শিক্ষাভবন, গণপূর্ত ভবন, খাদ্য ভবন থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নেয় ছাত্রলীগ। নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষও হয়েছে।
চাঁদা দিতে দেরি বা অপরাগতা প্রকাশ করায় ঢাবি, জাবি, রামেক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন জেলা শহরের বড় বাজেটের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখা হয়। ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্যে ৭০-৮০টি কলেজের উন্নয়ন অনিশ্চিত হয়ে যায়। ৬৫৫ কোটি ১২ লাখ টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাগিয়ে নেয় ছাত্রলীগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা মনে করছেন, সম্পদ উপার্জনে অধিক মনোযোগী হওয়াই ছাত্রলীগের বেপরোয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ার মূল কারণ। অর্থবিত্ত অর্জনের লক্ষ্য থেকেই বিভিন্ন সময় তারা বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়া এবং ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে আইনানুযায়ী শাস্তি না হওয়ায় তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড কমছে না।
পত্রপত্রিকায় চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি নিয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ও সাধারণ মানুষকে আক্রমণের যে কয়টি ঘটনা রিপোর্ট হয়েছে সে আলোকে ২০২১ সালে ১৫ টি, ২০২০ সালে ১২টি, ২০১৯ সালে ১২টি ২০১৮, সালে ১০টি, ২০১৭ সালে ৩২টি, ২০১৬ সালে ১৯টি, ২০১৫ সালে ২৬টি, ২০১৪ সালে ২২টি এবং ২০১৩ সালে ৩১টি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ নামের সঙ্গে ‘টেন্ডারবাজ’ তকমা লেগে যায়। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে সংগঠনের অনেক নেতা ও কর্মীর যুক্ত থাকার খবরও বরাবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ‘জোর যার মুল্লুক তার’ স্টাইলে নিজেদের কাজ করেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ‘গুণধর’ নেতা ও কর্মীরা। তাদের নিরস্ত করা কারো পক্ষেই সম্ভব হয়নি।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের খবরদারি যারা হেলাভরে অগ্রাহ্য করে তাদের প্রতিহত করার শক্তিও বোধ হয় কারো থাকে না। ফলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা এই চক্রটি সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। টাকার বিনিময়ে ভাড়া খাটে। একসময়ের উজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতি কলঙ্কিত হয়। যেমনটি ঘটেছে ১২ মার্চ ২০১৫ সালে বিদ্যুৎ ভবনে। ৭৩ লাখ টাকার একটি টেন্ডার জমা দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। গোলাগুলিতে আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে পুলিশ।
আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের পরও ক্ষমতাসীনদের সহযোগী সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করা যায়নি। মুছে ফেলা যায়নি তাদের ‘টেন্ডারবাজ’ পরিচয়। বরং ‘কয়লা ধুলে ময়লা যায় না’ কথাটির সত্যতা যেন আবারও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসীর কর্মকান্ডে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, একটি ৪২ লাখ ও একটি ৩১ লাখ টাকার কাজের জন্য নবাব আবদুল গনি রোডে অবস্থিত বিদ্যুৎ ভবনে দুটি কম্পানির পক্ষ থেকে দরপত্র জমা দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে এক পক্ষ এবং পরে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দরপত্র জমা দিতে গেলে আগের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শুরু হয় গোলাগুলি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সরকারের জনপ্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ করতে বড় ভূমিকা রাখছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল বা সহযোগী সংগঠনগুলো এসব দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময় পাচ্ছে বলে মনে হয় না। বিদ্যুৎ অফিসে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রমাণ করে, ছাত্রলীগ এখনো বেপরোয়া চরিত্রেই রয়ে গেছে। টেন্ডারবাজি থেকে মুক্ত হতে পারেনি সংগঠনটি।
শুধু টেন্ডারবাজি নয়, ছাত্রলীগ নামধারীদের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডেও দেশের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। দেশে একজন ব্যবসায়ী বাকি নেই যিনি বাংলাদেশে ব্যবসা করেন অথচ ছাত্রলীগকে চাঁদা দেন না। যত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হোন না কেন, চা কিংবা বাদাম বিক্রেতারাও এর বাইরে নন।
বাড়ি ঘর নির্মান থেকে শুরু করে সকল কন্সট্রাকশন কাজে চাঁদা দেয়া বাধ্যতামূলক। দেশে চাঁদা না দিয়ে কোনো অবকাঠামোর কাজ হয় নি। মানুষকে শোষন করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রলীগ নেতারাও আজ কোটিপতি।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন