৭ জুন, ২০২২

জামায়াতের আকিদা কতটুকু খারাপ?

 


আকিদার ক্ষেত্রে জামায়াত নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন আছে নাকি বাজারে। আমরাও কারো কারো থেকে শুনেছি জামায়াতের আকিদা খারাপ। তবে জামায়াত একটা দারুণ কাজ করেছে। তারা তাদের আকিদা পরিপূর্ণভাবে লিপিবদ্ধ করে রেখেছে। জামায়াতে ইসলাম তার সংক্ষিপ্ত পরিচিতির মধ্যে লিখেছে তাদের বেসিক আকিদা হলো ১.আল্লাহ্‌ তা’আলাই মানব জাতির একমাত্র রব, বিধানদাতা ও হুকুমকর্তা। ২. কুরআন ও সুন্নাহ্‌ই মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। ৩. মহানবী সা.-ই মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুসরণযোগ্য আদর্শ নেতা। ৪. ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই মুমিন জীবনের লক্ষ্য। ৫. আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি ও আখিরাতের মুক্তিই মুমিন জীবনের কাম্য। জামায়াত তার গঠনতন্ত্র বা সংবিধানে ডিটেইল আকিদা উল্লেখ করেছে। সেখানে তারা বলেছে তাদের আকিদার মূলকথা হলো 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ'। কালেমা তাইয়্যেবার বেসিক কথা হলো সকল বিধান দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। তিনিই সকল সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। আর যেহেতু আল্লাহর মনোনীত রাসূল হলেন মুহাম্মদ সা.। সুতরাং তাঁর কথা ও কর্মকে অনুসরণ করতে হবে। জামায়াত বলেছে কালিমা তাইয়্যেবাকে মেনে নেওয়া মানে নিচের বিষয়গুলোও মেনে নেওয়া। ১। আল্লাহ ব্যতীত কাউকে সাহায্যকারী, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা মনে না করা। ২। আল্লাহ ছাড়া কাউকে কল্যাণের কারণ ও আল্লাহ ছাড়া কাউকে বিপদদাতা মনে না করা। ৩। আল্লাহ ছাড়া কারো নিকট দোয়া, প্রার্থনা ও আশ্রয় খোঁজা যাবে না। ৪। আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে মাথা নত করা যাবে না। ৫। আল্লাহ ছাড়া কারো কাউকে সার্বভৌমত্বের মালিক মনে করা যাবে না। জামায়াত বলেছে এর পাশাপাশি নিন্মোক্ত বিষয়গুলোও মেনে নিতে হবে। ১। নিজেকে স্বাধীন ইচ্ছার মানুষ মনে করা যাবে না। সর্বদা আল্লাহর দাস হিসেবে নিজেকে ভাবতে হবে। ২। নিজেকে কোনো কিছুর স্বাধীন মালিক মনে করা যাবে না। যেমন নিজের জীবন, অঙ্গ, দৈহিক শক্তির একান্ত মালিক নিজেকে মনে করা যাবে না। এগুলো আল্লাহর মালিকানাধীন ও তাঁর থেকে আমানত প্রাপ্ত। ৩। সব কিছুর জন্য আল্লাহর নিকট দায়বদ্ধ থাকার চিন্তা করতে হবে। ৪। আল্লাহর পছন্দ-অপছন্দকেই নিজের পছন্দ-অপছন্দ বিবেচনা করতে হবে। ৫। আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই সকল কর্ম-তৎপরতার লক্ষ্য স্থির করতে হবে। ৬। আল্লাহর দেওয়া বিধানের বিপরীত সবকিছু প্রত্যাখ্যান করতে হবে। জামায়াত বলেছে এই বিষয়গুলোর পাশাপাশি কিছু কর্তব্যও রয়েছে। ১- মুহাম্মদ সা. থেকে প্রামাণ্যসূত্রে প্রাপ্ত সকল বিধান দ্বিধাহীনভাবে গ্রহণ করতে হবে। ২- আল্লাহ ও মুহাম্মদ সা. থেকে প্রাপ্ত আদেশ ও নিষেধকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে মেনে নিতে হবে। ৩- আল্লাহ ও মুহাম্মদ সা. ছাড়া অন্য কারো নিরঙ্কুশ আনুগত্য করা যাবে না। বরং অন্য যে কাউকেই শরিয়ত দিয়ে বিচার করতে হবে। ৪- আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসার চাইতে অন্য কাউকে বেশি ভালোবাসা যাবে না। ৫- মুহাম্মদ সা. ছাড়া অন্য কারো আনুগত্যের ব্যাপারে এমন মর্যাদা পোষণ না করা যে, তার আনুগত্য করার সাথে ঈমান ও কুফর ফয়সালা জড়িত। এই হলো জামায়াতে ইসলামের আকিদা। আমি যা বুঝেছি তাদের গঠনতন্ত্র পড়ে তা সংক্ষেপে উল্লেখ করেছি। আমি মনে করি জামায়াতের এই আকিদা আলাদা কোনো আকিদা নয়, বরং সকল মুসলিমেরই এই আকিদা বিশ্বাস পোষণ করা উচিত। যারা এখনো জামায়াতে ইসলামে যোগ দেননি, আমরা তাদের উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন আমরা হাতে হাত রেখে দ্বীন কায়েমের দায়িত্ব পালন করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করুন, আমাদের সঠিক পথ অনুসরণের তাওফিক দান করুন। যারা জামায়াতের আকিদা পড়তে চান তাদের জন্য কমেন্টে লিংক দেওয়া রয়েছে। #গণসংযোগ_পক্ষ

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন